সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৩

হেফাজতের হুমকির পর ॥ নারী কি বন্দী হবে?

০ হেফাজতের নেতারা এক যুগ ধরে জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করছে
০ অপরাজেয় বাংলা ভেঙ্গে ফেলা হবে- নেজামী
০ হেফাজতের অধিকাংশ দাবি সংবিধান পরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী- ড. কামাল
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ ৩০ লাখ শহীদ আর আড়াই লাখ মা-বোনের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনের ৪২ বছর পরে এসে প্রিয় মাতৃভূমি কি তালেবানী রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে? অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে কি উগ্রবাদীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে? রুদ্ধ হয়ে যাবে কি নারীর পথচলা? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে জেগে ওঠা গণজাগরণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা আর তা বাস্তবায়নে প্রকাশ্য হুমকির পর জনমনে এমন আতঙ্কজনক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। উগ্রবাদীদের সঙ্গে বিএনপি নেত্রীসহ তাঁর জোটের প্রকাশ্য সম্পর্ক ও সরকারের নমনীয়তা আতঙ্ককে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। অথচ, দেশের স্বাধীনতা ও সংবিধান, নারী অধিকারবিরোধী এ দাবি মানতে হলে ভেঙ্গে ফেলতে হবে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক অপরাজেয় বাংলাসহ সকল ভাস্কর্য, বন্ধ করে দিতে হবে এক নারী-পুরুষের সহশিক্ষা ও চলাচল। নেতৃত্ব বাদ দিয়ে বোরখা পরে ঘরের চার দেয়ালে বন্দী থাকতে হবে প্রধানমন্ত্রীসহ সকল নেত্রী এমনকি তাদের সমর্থক বিএনপি চেয়ারপার্সনকেও।
এতদিন জনরোষ এড়াতে হেফাজত নেতারা প্রচার চালিয়েছিল তাদের আন্দোলনে অন্য কোন দাবি নেই। দাবি কেবল মহানবীর বিরদ্ধে কটূক্তিকারী ব্লগারদের শাস্তি। তবে শুরু থেকে সরকারের নমনীয় অবস্থানের সুযোগে ক্রমেই বাড়তে থাকে জামায়াত সংশ্লিষ্ট এ সংগঠনের দাবির সংখ্যা। গত কয়েকদিনের প্রস্তুতির শেষে শনিবার রাজধানীতে কয়েক লাখ মুসল্লির মহাসমাবেশে ১৩ দফা ঘোষণা করে হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফীসহ অন্য নেতারা আগামী এক মাসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের হুমকি দিলেন। বিএনপির চেয়ারপার্সনের হয়ে সংহতি জানাতে আসা বিএনপি নেতাদের পাশে রেখে হেফাজত নেতারা হুমকি দেন, ক্ষমতায় থাকতে হলে বা আসতে হলে ১৩ দফা মানতে হবে। অন্যথায় অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচী। হেফাজতের দাবির মধ্যে আছে আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস। আছে ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা। সরকারীভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা, মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘেœ নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা, রেডিও- টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপ্রয়াস বন্ধ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত এনজিও এবং খ্রীস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা। দাবির তালিকায় আছে- রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা। দাবি তোলা হয়েছে, অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
অর্থাৎ হেফাজতের সব দাবি মানতে হলে ভেঙ্গে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক অপরাজেয় বাংলাসহ সব ভাস্কর্য, বন্ধ করে দিতে হবে নারী-পুরুষের সহশিক্ষা বা মেলামেশাও। পাশাপাশি দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো যাবে না। শাহবাগে গণজাগরণ শুরুর পর চুপ থাকলেও কদিন পরই এর সঙ্গে জড়িতদের ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামে হেফাজতে ইসলামী। একই দাবি জানায় জামায়াতে ইসলামীও। অবশ্য হেফাজতের কৌশলী দাবি, তাদের দাবির সঙ্গে জামায়াতের দাবির কোন সম্পর্ক নেই। নিজেদের জামায়াত সম্পৃক্ততাও অস্বীকার করছেন হেফাজত নেতারা। যদিও হেফাজতের প্রায় সব নেতাই একযুগ ধরে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ রাজনীতি করছে। হেফাজতের এসব দাবি মানতে হলে পুরো পাল্টে দিতে হবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা, শিক্ষা পদ্ধতি। বন্ধ করে দিতে হবে রাষ্ট্রীয় বহু আচার, মুক্তিযুদ্ধের নাটক-সিনেমা নির্মাণ করা যাবে না, একত্রে চলাফেরা, চাকরি, পড়ালেখাও করা যাবে না। ভাস্কর্য আপত্তি কেন, জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের উপদেষ্টা আঠারোদলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘ইসলাম অনুযায়ী যে কোন প্রাণীর মূর্তি করা যাবে না।’ ভাস্কর্যে তো কেউ পূজা দেয় না, তাহলে কি সমস্যাÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পূজা না দিলেও কোন প্রাণীর আবক্ষ মূর্তি রাখা যাবে না।’ তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজেয় বাংলা কি আপনারা ভেঙ্গে দেবেন?-জানতে চাইলে নেজামী বলেন, ‘এক সময় মানুষ এটাও ভেঙ্গে দেবে।’ কখন সেটা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যখন মানুষ বুঝতে পারবে এটা ইসলামী ধ্যান ধারণার বিরোধী, তখন এটা হবে।’ এটা কি কখনও হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই জাগরণ তো এখন সারাদেশে শুরু হয়েছে।’ সেনানিবাসে খালেদা জিয়ার বাড়িতেও তো জিয়াউর রহমানের একটি আবক্ষ মূর্তি ছিল, এটা নিয়ে কেন কথা বলেন না, জানতে চাইলে বিএনপির শরিক দলের নেতা ও হেফাজতে ইসলামের উপদেষ্টা বলেন, ‘ওটা তো সেনানিবাসের ভেতরে ছিল। আমরা কেমনে জানব? তবে কোন ব্যক্তির ভার্স্ক হলে সেটা যারই হোক, ভেঙ্গে ফেলতে হবে।’ চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে এই দাবি কেন জানাননি, জানতে চাইলে নেজামী বলেন, ‘তখন তো ভাস্কর্য হয়নি।’ শহীদ মিনারের বর্তমান রূপও পছন্দ নয় হেফাজত নেতাদের। তাদের দাবি এই রূপটি বিকৃত। শুরুতে এর সঙ্গে মসজিদ করার কথাও ছিল। তাই নামের শেষে মিনার শব্দটি যোগ করা হয়েছে। হেফাজতের চতুর্থ দাবি মানতে হলে ছেলে ও মেয়েদের একসঙ্গে শিক্ষা বন্ধ করতে হবে। একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে ও মেয়ে পড়তে পারবে না। বন্ধ করে দিতে হবে একই সঙ্গে চাকরি। ছেলে আর মেয়েদের মেলামেশাও বন্ধ করতে হবে।
নারীদের পর্দা ছাড়া পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না বলেও জানান নেজামী। হেফাজত নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, ইসলাম নারীদের বলেছে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে। এখানেই শেষ নয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নাটক-সিনেমায় স্বাধীনতাবিরোধীদের দেখানো যাবে না বলে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আবদার তাদের। হেফাজত দাবি করছে, গণমাধ্যমে ধর্মীয় লেবাসধারী লোকদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়। এতে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব জন্মে এটা বন্ধ করতে হবে। সংগঠনের ১৩ দফা দাবির মধ্যে নবম দাবি এটি। এই দাবির আড়ালে হেফাজত মূলত মুক্তিযুদ্ধের নাটক-সিনেমার কথাই বুঝিয়েছে। সে সময়কার মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামীর স্বাধীনতাবিরোধীদের পোশাকের প্রতি ইঙ্গিত করেই এই দাবি তোলা হয়েছে। তাহলে কি ৭১ নিয়ে নাটক-সিনেমা বানানো যাবে না?- জানতে চাইলে আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, কেবল ৭১-এর নাটক সিনেমাতেই নয়, অন্যগুলোতেও ইসলামী লেবাসধারীদের খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরা হয়।’ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার-আলবদররা যে পোশাকে ছিলেন তা কেন তুলে ধরা যাবে না, জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। কৌশলে জামায়াত শিবিরের নেতাদের মুুক্তি দাবি করে হেফাজত দাবি করা শুরু করেছে, দেশে আলেম ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও গণহত্যা চলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। আর গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি চেয়েছে তারা। এদিকে ১৩ দফা ঘোষণার পর দেশজুরে উদ্বেগের সঙ্গে সরকার ও বিরোধীদলের অবস্থানের সমালোচনা করছেন সাধারন মানুষ। সরকারের সমালোচনা করার কারণ হচ্ছে, শুরু থেকে বিএনপি-জামায়াতের মদদদান প্রকাশ হওয়ার পর থেকে উগ্রবাদী এ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শক্ত হলে এরা এতবড় ঔদ্ধত্য দেখাতে পারত না। অন্যদিকে জাতি হতবাক বিরোধীদল ও তার নেত্রীর নারীবিরোধীদের সঙ্গে সম্পর্কে। ১৩ দফা দাবি দেশের সংবিধানপরিপন্থী ও মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও গণফোরা সভাপতি ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, হেফাজতের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদসহ তাদের অধিকাংশ দাবি সংবিধানপরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী। কোনভাবেই এসব দাবি বাস্তবায়ন করা যাবে না। শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তোলা প্রশ্ন নিয়ে রবিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আলেম-ওলামা, শিক্ষাবিদ, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছে। সুতরাং এই শিক্ষানীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, হেফাজতের দাবি বাস্তবায়ন করা মানে দেশকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানী তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করা। সরকার হেফাজতের সঙ্গে আপোস করলে দেশের সর্বনাশ ডেকে আনবে। জনগণ ও দেশের নিরাপত্তা থাকবে না। তিনি বলেন, ইসলামের নামে জঙ্গীবাদকে মেনে নেয়া যাবে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম ছিল ও থাকবে। তবে মওদুদীর ইসলাম বাস্তবায়ন করতে দেয়া যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৩ দফা দাবি ২০১৩ সালের রাজনীতির বাস্তবতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে। এটি দেশকে পেছনে ঠেলে দেয়ার চিন্তা। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে এ ধরনের দাবি উত্থাপনেরই সুযোগ নেই, মেনে নেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে এ দাবি অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অন্যদিকে ১৩ দফা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে নারী সমাজসহ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিদের মাঝে। জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য শিরিন আখতার রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বলেছেন, হেফাজতের ১৩ দফা দাবি অবৈধ। কারণ, এ সকল দাবি স্বাধীনতা, সংবিধান ও নারী অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংহতি জানিয়ে পুরো নারী সমাজকে অবমাননা করেছেন। বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি হেফাজতে ইসলাম ত্যাগ করুন এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সহযোগিতা করুন। ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত ছিল, হেফাজতের সমাবেশের ধিক্কার জানানো। কিন্তু এর পরিবর্তে তিনি হেফাজতে ইসলামকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চট্টগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করলেন। কিন্তু শাপলা চত্বরে কেন ১৪৪ ধারা জারি করলেন না, এর জবাবও জাতি চায়। নারী সাংবাদিকদের ওপর হেফাজতের হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করে মাহফুজা খানম বলেন, অন্যথায় নারী সমাজ লাখ লাখ নারীকে এক করে সমাবেশ করবে। অভিনয় শিল্পী রোকেয়া প্রাচী বলেন, যদি ১৩ দফা মানতে হয়, তবে সেনাবাহিনীতে যে নারী সদস্যরা রয়েছেন, তাদেরও বোরখা পরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রীকে রাজনীতি ছেড়ে বোরখা পরে ঘরে ফিরে যেতে হবে। গণজাগরণ মঞ্চের সেøাগান কন্যা শারমিন আক্তার লাকি বলেন, আজ নারীরা হিমালয় পর্বত জয় করছেন। আর হেফাজত চায়. নারীকে গৃহবন্দী করতে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন