বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৩

মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদে জামায়াতের কর্মীর ছেলের চাকরি

প্রথমআলো | আজাদ রহমান, ঝিনাইদহ | তারিখ: ২০-০৩-২০১৩
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদ ব্যবহার করে ছেলের জন্য পুলিশের চাকরি চূড়ান্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বজলুর কাষ্টভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক এবং নিত্যানন্দী মাঝপাড়া জামে মসজিদের ইমাম।

এলাকার একাধিক মুক্তিযোদ্ধা জানান, গত ৮ জানুয়ারি পুলিশে বেশ কিছু লোক নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের বজলুরের ছেলে বায়েজিদ বোস্তামী রয়েছেন। বায়েজিদের পুলিশি তদন্ত শেষ হয়েছে। তিনি চাকরির নিয়োগপত্রও পেয়েছেন। এখন কর্মস্থলে যোগদানের অপেক্ষায় আছেন। বায়েজিদ এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় তাঁর বাবা বজলুর একজন মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে সনদপত্র জমা দেন। কিন্তু ওই সনদ জাল। বজলুর রহমান নামে কাষ্টভাঙ্গা গ্রামে কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বজলুর তাঁর ছেলের চাকরির জন্য যে সনদ জমা দিয়েছেন, তা কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। সনদপত্রে দেখানো হয়েছে, এটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা। মন্ত্রণালয়ের মু.বি.মা/সা/ঝিনাইদহ/প্র-৩/৫২/২০০২/৯১৫৯ নম্বর স্মারকে ০২/১০/২০১১ তারিখে ইস্যু করা হয়েছে। এই সনদপত্রে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের জাল স্বাক্ষর রয়েছে। আর মূল সনদের ফটোকপি সত্যায়িত করেছেন যশোর সরকারি এম এম কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুল কাদের।

বজলুর জানান, ফুলবাড়ী গ্রামের রেজাউল ইসলাম তাঁর ছেলের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। রেজাউলই তাঁর নামে মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র তৈরি করেছেন। তিনি এটা করতে চাননি। কিন্তু রেজাউল বলেছেন, এটা না করলে ছেলের চাকরি হবে না। সনদপত্রটি জাল বলে তিনি স্বীকার করেন এবং এর জন্য তিনি দায়ী নন বলে দাবি করেন। বজলুর দাবি করেন, তিনি ছেলের চাকরির জন্য রেজাউলকে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন।

রেজাউল জানান, তিনি চাকরি পেতে সহযোগিতা করেছেন মাত্র। সনদপত্রের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এটা বজলুর জানেন। আর টাকা নেওয়ার কথাও তিনি অস্বীকার করেন। কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আলমগীর হোসেন জানান, বজলুর রহমান তাঁদের দলের একজন কর্মী।
কালীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সেকেন্দার আলী মোল্লা জানান, তিনি বজলুরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন