পিনাকী ভট্টাচার্য

হিন্দু ধর্মতত্ত্বে নাস্তিক বলতে তাঁদেরকেই বোঝায় যারা বেদের অপৌরুষেয়তায় বিশ্বাস করে না। অর্থাৎ বেদকে ঐশ্বরিক গ্রন্থ মনে করে না। এর মানে এটা নয় যে নাস্তিকরা নিরীশ্বরবাদী বা ধর্মদ্রোহী। হিন্দুদের মধ্যে চার্বাক পন্থীরা ধর্ম পালন করেও নাস্তিক্যবাদের চর্চা করতে পারেন। তারা বেদের পশুঘাত, শ্রাদ্ধাদি ক্রিয়া এবং ব্রাহ্মণের শ্রেষ্ঠত্ব মানেন না। হিন্দু ধর্মের মতে ভারতীয় দর্শনের মধ্যে জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মও নাস্তিক দর্শন।
নাস্তিক শব্দটা অবশ্য প্রথমে ঘৃণা ও অবহেলা প্রকাশের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিলো। কিন্তু নাস্তিক ও আস্তিকদের মধ্যে হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা তীক্ষ্ণ বিতর্কে হিন্দু ধর্মের কঠোরতা পরিবর্তিত হয়েছে। ভারতবর্ষের অহিংসার দর্শন নাস্তিকদের অবদান। জৈন আর বৌদ্ধ ধর্মের উদ্ভব হওয়ার ক্ষেত্রে চার্বাক নাস্তিকদের অবদান অনস্বীকার্য। নাস্তিকদের কারণেই হিন্দু ধর্ম সংস্কার এবং এর ফলে মানব জীবনের আদর্শ উচ্চতর হয়েছে। তর্কবিদ্যাও নাস্তিকদের অবদান।
এথিস্টদের নিরীশ্বরবাদী বলার ক্ষেত্রেও সমস্যা আছে, কারণ বৌদ্ধরা নিরীশ্বরবাদী। তবে কী বলা যায় এথিস্টদের? আমার প্রস্তাব যাদের জন্য এটা মাথা ব্যথা তারা একটু এটা নিয়ে মাথা ঘামাক।
হেফাজতে ইসলামী কি জানে যে এটা একটা বিশুদ্ধ সংস্কৃত এবং কঠোর বৈদিক শব্দ?
লেখক: ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন