শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০১৩

হেফাজত নেতারা একাত্তরে মুজাহিদ বাহিনী গঠন করে

জনকণ্ঠ, স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের সুন্নি আকিদায় বিশ্বাসী আলেম ওলামাদের সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বাংলাদেশ আবারও দাবি করেছে, হেফাজতে ইসলাম নামধারী সংগঠনের উদ্যোক্তারা একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ছিল। তারা মুসলিম লীগ জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় মুজাহিদ বাহিনী গঠন করেছিল। এ বাহিনী গঠনের পর একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, গুম, নারী নির্যাতনসহ ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম সংঘটিত করেছে। দেশের পুরনো কওমী তথা ওহাবী মাদ্রাসাগুলোতে মুজাহিদ বাহিনীর ক্যাম্প ছিল।
আলবদর, আলশামস-রাজাকারদের মতো এ সংগঠনটিও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী কর্মকা- সংঘটিত করেছে।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ এয়াকুব আলী খান আবারও হেফাজত ইসলাম সম্পর্কে সাধারণদের জ্ঞাতার্থে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন। এর আগে হেফাজতে ইসলাম নিজেদের মুজাহিদ বাহিনী নয় দাবি করে সুন্নি আলেম সংগঠনটির বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়েছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে তারা পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, হেফাজতে ইসলামের মামলা দায়েরের অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। আমরা চাই তারা মামলা দায়ের করুক। আদালতেই আমরা প্রমাণ করব যে তারা মুজাহিদ বাহিনী গঠনের দায়িত্ব ছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়Ñ দশ শীর্ষ সুন্নি আলেমকে হত্যা চেষ্টার পেছনে জামায়াত-শিবিরের অপকর্মের চেষ্টার বিরুদ্ধে দেশবাসী যখন সোচ্চার হেফাজতীরা বিভ্রান্তিমূলক হ্যান্ডবিল প্রচার করে জাতির কাছে তাদের মুখোশ উন্মোচিত করেছে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আহলে সুন্নাত নেতারা স্পষ্টভাবে জানান, চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা ও ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসাসহ সকল উল্লেখযোগ্য কওমী মাদ্রাসাতেই তাদের ক্যাম্প ছিল। তৎকালীন ছাত্র-শিক্ষকদের সমন্বয়ে এ বাহিনী গঠিত হয়েছিল। এসব ওহাবী মৌলভীরা একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অমুসলিমদের গনিমতের মাল হিসেবে ফতোয়া দিয়েছিল। হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন যে মন্দিরটি আছে একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেই মন্দির ভেঙ্গে তারা মসজিদ নির্মাণ করেছিল এবং ওই মন্দির স্থলে কিছুদিন নামাজও পড়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তারা নিজেদের অর্থে সে মন্দির তারা পুননির্মাণ করে জনরোষ থেকে রক্ষা পেয়েছিল। নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কমিটিকে মুজাহিদ বাহিনীর কার্যক্রম ও নানা তথ্য তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন স্থানে কওমী মাদ্রাসার পাশে প্রবীণ লোকেরা এ ব্যাপারে সাক্ষী দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন। যথাসময়ে আদালতে সাক্ষী উপস্থাপন করে হেফাজতে নেতাদের অপরাধ প্রমাণ করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন