বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৩

বাংলাদেশের কৃষকদের সর্বস্বান্ত করছে হরতাল

আল-জাজিরার প্রতিবেদন
হরতালের কারণে বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থা চূড়ান্তভাবে ভেঙে পড়েছে। গ্রাম থেকে উৎপাদিত ফসল শহরের বাজারগুলোতে না পাঠাতে পারায় গ্রামের কৃষকরা ভয়ংকর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একেকটি হরতালের কারণে প্রতিদিন বাংলাদেশের অর্থনীতি থেকে ঝরে যাচ্ছে ২৫০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন জানিয়েছে এমন তথ্য।

'বাংলাদেশ স্ট্রাইকস্ ডিভাস্টেট রুরাল ফার্মার্স' শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গত ১ এপ্রিল। প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গের কৃষকরা ১৯৯৮ সালের বন্যা-পরবর্তী সময়ে এমন দুরবস্থায় আর পড়েননি। কৃষকরা জানিয়েছেন, খাদ্যপণ্য পরিবাহিত যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত ঘোষণা করা হলেও কার্যত তা মানা হয় না। এ কারণে তাঁদের উৎপাদিত পণ্য ক্ষেতেই পচিয়ে ফেলতে হচ্ছে। পাশাপাশি ফসল বিক্রি করতে না পারায় দিনমজুরদের খোরাকিও তাঁরা দিতে পারছেন না। এতে ভূমিহীন বর্গাচাষীরা নিদারুণ অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও এই কৃষক-শ্রমিক-নিম্নবিত্তরাই দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছেন। অর্থনীতির এ গতিশীলতার কারণে কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সহিংসতা অর্থনীতির জয়রথকে আটকে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দিনকে দিন এ হরতালগুলো আরো সহিংস হয়ে উঠছে। ব্যবসায়ীরা দুই দলের প্রতিই হরতাল বন্ধের আবেদন জানালেও বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় কেউই এ আবেদনে সাড়া দেয় না।
হরতালকে 'প্লেগ' উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, গত দুই দশক ধরে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি বিরোধী দলে থাকাকালীন সময়ে প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলতে এই অস্ত্র ব্যবহার করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচারের কার্যক্রম শুরু হলে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো নিয়মিত বিরতিতে হরতালের ডাক দিচ্ছে। এতে সরকার বিপাকে না পড়লেও খেটে খাওয়া লোকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন