শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৩

সাঈদীর সনদ বাতিল হবে

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সনদ বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।


এবিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সংসদীয় কমিটির সুপারিশ মন্ত্রণালয়ের কাছে এলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।”

সাঈদীর দাখিল পাসের ৫০ বছর এবং আলিম পাসের ৪৮ বছর পর বয়স ও নাম পরিবর্তন করায় ইতিমধ্যে সংসদীয় উপ-কমিটির সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “উপ-কমিটির প্রতিবেদনটি স্থায়ী কমিটি চূড়ান্ত করেছে। একইসঙ্গে নাম ও বয়স পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত সকল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।”

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৯ নম্বর উপ-কমিটি সাঈদীর বয়স ও নাম পরিবর্তনের ঘটনা তদন্ত করেছে।

উপ-কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাদ্রাসা থেকে ১৯৫৭ সালে দাখিল ও ১৯৬০ সালে আলিম পাস করেন সাঈদী। ২০০৮ সালে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে নাম ও বয়স পরিবর্তন করে মাদ্রাসা বোর্ড।

দাখিল পরীক্ষার কাগজপত্রে তার নাম ছিল মোস্তফা দেলোয়ার হোসেন। আলিম পরীক্ষার সময় তা পরিবর্তন করে আবু নাঈম মো. দেলোয়ার হোসাইন করা হয়। সর্বশেষ পরিবর্তন করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী করা হয়। দাখিল পরীক্ষার সময় তার বয়স লেখা হয়েছিল ১৬ বছর, আর আলিমে ছিল ১৯ বছর।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম ও বয়স সংশোধনের বিষয়ে ‍অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করে এটা প্রতীয়মান হয় যে, ৫০ বছর আগে পাস করা সনদের নাম ও বয়স সংশোধনের জন্য কোনো নির্ভরযোগ্য রেকর্ড ব্যতীত বোর্ডের প্রণীত নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে ওই কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।”

গত বছরের ১২ আগস্ট সাঈদীর নাম ও বয়স পরিবর্তনের অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উপ-কমিটি গঠন করা হয়। আব্দুল ওহাবকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মো. শাহ আলম এবং বীরেন শিকদার।

গত ২১ জানুয়ারি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপ-কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ওই প্রতিবেদনে সাঈদীর সনদ বাতিল করার সুপারিশ এবং নাম ও বয়স পাল্টানোর ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাদ্রাসা বোর্ডের কর্মকর্তাদের শাস্তির সুপারিশ না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। ওইদিন কমিটি পরবর্তী বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপনের সুপারিশ করে।

মেননের সভাপতিত্বে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও মির্জা আজম, শেখ আব্দুল ওহাব, কাজী ফারুক কাদের, বীরেন শিকদার, মো. শাহ আলম এবং মু. জিয়াউর রহমান অংশ নেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন