শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৩

হেফাজত প্রতিরোধের হরতালে সাবেক ছাত্রনেতাদের সমর্থন

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ প্রতিরোধ এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টার হরতালে সমর্থন দিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতারা।

বুধবার রাতে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ ২৫টি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ওই হরতাল ডাকে।


শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের ব্লগারদের ‘নাস্তিক’ আখ্যায়িত করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে লংমার্চ করে আগামী ৬ এপ্রিল রাজধানীতে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।

বৃহস্পতিবার জাসদ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ সমর্থনের কথা জানান সাবেক ছাত্রনেতারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, “হেফাজতে ইসলাম (ওহাবীপন্থী) নামক সংগঠনটি ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচির নামে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। নামে হেফাজতে ইসলাম হলেও তারা মূলত মুক্তবুদ্ধি, মুক্তচিন্তা, নারী স্বাধীনতা ও প্রগতিবিরোধী এবং মওদুদীপন্থীদের ক্রীড়নক।”

বিবৃতিদাতারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদের নাস্তিক, মুরতাদ বলে অপবাদ দেয়ার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলাম প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধাপরাধী জামাত-শিবির চক্রের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে।

“তাই আমরা দেশের সকল গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে হরতাল পালনের আহবান জানাচ্ছি,” বলা হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- বাংলাদশে ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসনে নাহিদ, বিপ্লব কুমার রায়, জাসদ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল কবির স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক আলী হাসান তরুণ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লুনা নূর, বাকী বিল্লাহ, সামসুল আলম সজ্জন, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, মানবেন্দ্র দেব, ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, সমাজবাদী ছাত্রজোটের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম উদ্দিন, বাংলাদশে ছাত্র কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি মহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটন ও সাধারণ সম্পাদক কামরূল হাসান প্লাবন, জাতীয় ছাত্র ঐক্যের সাবেক সভাপতি জুয়েল আহমেদ খান, ছাত্র সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ ও ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুভাষীশ সমাদ্দার শুভ।

হেফাজতবিরোধী এই হরতালে সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বাকবিশিসের পক্ষে মো. আকমল হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সমর্থন দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, “সরকার স্বাধীন মতপ্রকাশের কারণে ব্লগারদের গ্রেপ্তার করছে যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধান অন্তরায়।”

এদিকে হরতালে সমর্থন দিয়েছে রাজশাহীর সব মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ডসহ কয়েকটি প্রগতিশীল সংগঠন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পৃথক বিবৃতিতে হরতালের সমর্থনে শুক্রবার বিকালে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে গণসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

বিবৃতিদাতারা হলো- বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাজশাহী জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ড, সকল থানা কমান্ড, বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট কমান্ড, ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন গেরিলা বাহিনী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, কবিকুঞ্জ, লেখক পরিষদ, সংস্কৃতি একাডেমি ও সেক্টরস কমান্ডারস ফোরাম।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রাজশাহী জেলা কমান্ডার সাইদুর রহমান বলেন, হেফাজতে ইসলামের ডাকা লংমার্চ কার্যত দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিনাশ সাধনের উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত।

“এ লংমার্চ সংগঠন ও পরিচালনায় জামায়াতে ইসলামী মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। এর সাথে বিএনপির সমর্থন যুক্ত হওয়ায় একে কোনো নির্দলীয় কর্মসূচি বলা যাবে না। সে কারণেই এই লংমার্চ প্রতিরোধ করা গণতান্ত্রিক শক্তির কর্তব্য।”

জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদসহ দেশের সব বামদলও শুক্রবারের হরতালে সমর্থন দেয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন