বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৩

শনিবার শাহবাগে জাগরণের সমাবেশ

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বাচ্চ শাস্তি এবং জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করাসহ ছয় দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছেন গণজাগরণ মঞ্চের প্রতিনিধিরা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে রওনা হন জাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।

এ সময় তারা যুদ্ধাপরাধীদের সর্বাচ্চ শাস্তি এবং জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা ছাড়াও গ্রেপ্তার ব্লগারদের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।


বিক্ষোভ মিছিল ফার্মগেইট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইমরান এইচ সরকার বলেন, শনিবার জোহরের পর আবার শাহবাগে সমাবেশে মিলিত হবে জাগরণ মঞ্চ।  

এই সমাবেশে সবাইকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান ইমরান।   

এরপর ফার্মগেইট থেকে জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ পাঁচ প্রতিনিধি প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে যান।

প্রধানমন্ত্রীর করযালয়ের মূল গেইট থেকে পাস নিয়ে গ্রিন ব্লক পর‌্যন্ত হেঁটে যান তারা। সেখানে ডিজি অ্যাডমিন কবির বিন আনোয়ার তাদের স্বাগত জানান।

এই প্রতিনিধি দলে ইমরান এইচ সরকার সঙ্গে রয়েছেন ছাত্রমৈত্রির বপ্পাদিত্য বসু, ছাত্রফ্রন্টের মেহেদী হাসান তমাল, ব্লগার রাশেদুল হাসান ও কানিজ আকলিমা চিনু।

এছাড়া ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুসহ বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এবং বাংলাদেশ হাক্কানী খানকা শরীফও যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেয়।

দেশের প্রতিটি জেলায়ও গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে লেখা স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয় জেলা প্রশাসনের হাতে।

জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরু করতে গণজাগরণ মঞ্চের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হয় ২৬ মার্চ। ওই দিন শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধা–জনতা সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়ার এই কর্মসূচি ঘোষণা করে গণজাগরণ মঞ্চ।

ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি স্মারকলিপি দেয়ার পাশাপাশি দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়ার কথা রয়েছে।

যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে তার ফাঁসির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে একদল তরুণের অবস্থান কর্মসূচি দেশব্যাপী গণজাগরণের সৃষ্টি করে।

যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে সৃষ্ট এই প্রতিবাদ দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন পাওয়ার পর জাতীয় সংসদে আইন সংশোধন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার ও আসামি পক্ষের আপিলের সমান সুযোগের বিধান যোগ করা হয়।

এছাড়া গণজাগরণ মঞ্চ থেকে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবির মুখে সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে কোনো দল বা সংগঠনের যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিধানও যোগ করা হয়।

পরে ২১ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে সময় বেঁধে দিয়ে ৬দফা দাবি জানানো হয় গণজাগরণ মঞ্চ থেকে।

প্রজন্ম চত্বরে ওইদিন লাখো মানুষের সমাবেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে ১৭ দিনের টানা অবস্থান কর্মসূচির সমাপ্তি টানা হয়। তবে এখনো নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন