শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৩

৮৫ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি ॥ গ্রেফতার ব্লগারদের অবিলম্বে মুক্তি দিন

গণজাগরণ সংবাদ
মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করা এবং গ্রেফতারকৃত ব্লগারদের মুক্তির দাবিতে দেশের ৮৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। শুক্রবার বিভিন্ন পেশাজীবীর নাগরিকের ব্যানারে যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ব্লগারদের নেতৃত্বে পরিচালিত গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের প্রতি সারাদেশের সর্বস্তরের নারী-পুরুষ যখন অকুণ্ঠচিত্তে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন, এই মঞ্চ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবির পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিটি আজ যখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে, তখনই এই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকের ওপর যুগপৎভাবে ধর্মব্যবসায়ী ও সরকারী মহল থেকে আক্রমণ নেমে এসেছে। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য চিহ্নিত রাজনৈতিক গোষ্ঠীটিসহ এদের ধর্মব্যবসায়ী সহায়ক শক্তিসমূহ এই আন্দোলনকে ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ভিত্তিহীন অপবাদে কালিমালিপ্ত করা এবং তাদের ওপর শারীরিক আক্রমণ চালানোর পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের ওপর দমননীতি প্রয়োগের জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে চলেছে।
তাঁরা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার্থে এগিয়ে আসা ধর্মব্যবসায়ীদের চাপের মুখে সরকার নতজানু হয়ে আন্দোলনে সক্রিয় প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক তরুণ প্রজন্মের ওপর দমনপীড়ন চালানোর ঘৃণ্য নীতি গ্রহণ করেছে। ব্লগার মশিউর রহমান, সুব্রত অধিকারী, রাসেল পারভেজ ও আসিফ মহিউদ্দীনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া অযৌক্তিক বলে তাঁরা মনে করেন। ধর্মের নাম ব্যবহারকারী এসব অপশক্তির চাপে সরকার অনেক তরুণকে অভিযুক্ত ও গ্রেফতার করার জন্য তালিকা তৈরি, বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন ও নতুন-নতুন নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, সরকারী এসব দমনমূলক পদক্ষেপ প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক অপশক্তিকেই মদদ দিচ্ছে এবং দেশে মুক্তচিন্তা ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের মৌলিক অধিকারকে হরণ করে সার্বিক গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করে তুলেছে। বিবৃতিতে গ্রেফতারকৃত ব্লগারদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি এবং অবিলম্বে মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার হরণমূলক সকল কর্মকা- বন্ধ করার জোর দাবি জানান হয়। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সমাজকর্মী খুশি কবীর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের অধ্যাপক আলী রিয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক ও ব্লগার একরামুল হক শামীম, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের নির্বাহী পরিচালক খায়রুজ্জামান কামাল প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন