রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৩

জামায়াত বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করার দাবি

গণজাগরণ সংবাদ
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জঙ্গি ও সহিংস আগ্রাসন পরিচালনার দায়ে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
গতকাল শনিবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন তিনটি এ দাবি জানায়। একই সঙ্গে তারা জামায়াতের আর্থিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে নিবিড় রাষ্ট্রীয় সতর্কতার দাবি জানিয়েছে, যাতে এসব প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে ব্যবহূত হতে না পারে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় সারা দেশে একাত্তরের পরাজিত পাকিস্তানপন্থী মৌলবাদী চক্রের পরিকল্পিত হামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, মন্দির-প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। বেশির ভাগ জায়গায় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে হামলার সময় ও পরে স্থানীয় প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে, যা বিস্ময়কর!
লিখিত বক্তব্যে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও সাংবাদিক হারুন হাবীব বলেন, জামায়াত কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়, বরং সন্ত্রাসী সংগঠন। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলা হয়, স্বাধীনতাবিরোধীদের নজিরবিহীন সহিংসতার নিন্দা না জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাণ্ডবকারীদের সংঘর্ষে প্রাণহানিকে সরকারের হাতে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়েছেন। এতে তিনি পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের হাতে সংঘটিত ঐতিহাসিক গণহত্যাকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন; যা চরম দুর্ভাগ্যজনক।
সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান ও মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান এ কে খন্দকার বলেন, ‘যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তাদের এ দেশে রাজনীতি করা তো দূরের কথা, আমি মনে করি, তাদের এ দেশের থাকারও অধিকার নেই।’
সরকারের প্রতি জামায়াত নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘জামায়াতকে বেআইনি ঘোষণা করুন, তাহলে দেশের মানুষ তাদের প্রতিরোধ করবে।’
জামায়াতকে এখনো নিষিদ্ধ না করায় হতাশা ব্যক্ত করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে সব সাক্ষী ও তাঁদের পরিবারের পূর্ণ নিরাপত্তা দান এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহী মামলা করার দাবিও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন