রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৩

জামায়াত দেশ ও জাতির ক্যান্সার, এখনই নিষিদ্ধ করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জামায়াত-শিবির দেশ ও সমাজের ক্যান্সার। মানব শরীরে ক্যান্সারের অস্তিত্ব রেখে কখনও সুস্থ থাকা যায় না। তেমনি জামায়াতকে এ দেশের রাজনীতিতে রেখে কখনও শান্তি পাওয়া যাবে না। এ দেশের জন্মের সময়ই তারা বিরোধিতা করেছিল। তাই অন্য অপবাদ বাদ দিলেও অন্তত এ দেশে তাদের রাজনীতি করার ও পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার প্রদান করা চলে না। তাই জামায়াতকে এই মুহূর্তেই নিষিদ্ধ করতে হবে। শনিবার জামায়াত-শিবির আইন করে নিষিদ্ধ করা, যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার ও গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্বের সশস্ত্রযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত আমরা একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা নামক সংগঠনের এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।

মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা ও পরিপূর্ণ বিজয়ের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধারা প্রজন্ম চত্বরে আনুষ্ঠানিক অগ্রাভিযান শুরু করেছে। এ লড়াই সংগ্রামের শুরু থেকেই আমরা তাদের সহযোগিতা, সংহতি ও প্রেরণা যোগাচ্ছি, পাশাপাশি তাদের সঙ্গে জাগ্রত অবস্থান নিয়েছি। শাসকদের অনীহা ও রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতার কারণে স্বাধীনতার ৪২ বছরেও যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবিরের বিচার সম্পন্ন করতে পারেনি। এ কথা বিন্দুমাত্র অপলাপ নয় যে, শাসক দলগুলোর রাজনীতি এখন আদর্শবিবর্জিত ক্ষমতাভিলাষী প্রক্রিয়ার নামমাত্র। আদর্শের বুলি সেখানে মুখোশ ছাড়া কিছুই নয়। ক্ষমতালিপ্সাই এখনকার রাজনীতির চরম বাস্তবতা। মানবতা বা দেশপ্রেম কোথাও নেই।
এ চরম হতাশাজনক অবস্থায় আমাদের সন্তানরা দেশপ্রেমিক জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অহিংস পন্থায়, অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে নির্দলীয় রাজনৈতিক চরিত্র অক্ষুণœ রেখে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্বের লড়াই শুরু করেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের সেøাগান জয় বাংলাকে আবার জনতার মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছে। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী ও এরশাদ সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তাদের নষ্ট ও নাস্তিক বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন যা ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই না। সবার উচিত মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবির এ লড়াইয়ে দ্বিতীয় প্রজন্মকে মমতা, সাহস, সহমর্মিতা প্রদান করা।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, যে দল যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতাবিরোধীদের বাঁচাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে, মন্দিরে আগুন দিয়ে লুটপাট করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করে হত্যা করে, ধর্ম নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, পবিত্র মসজিদ আবমানা করে, জাতীয় পতাকাকে পদদলিত করে, শহীদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে, এমনকি কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে, তাদের সমালোচনা করায় আলেমদের হত্যার হুমকি দেয় তাদের আর গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বলার উপায় নেই। তাই জামায়াত ও সশস্ত্র জঙ্গী সংগঠনকে এই মুহূর্তে নিষিদ্ধ করতে হবে, অন্যথায় তা হবে সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল। পাশাপাশি ১৯৭২ সালের আইনে অভিযুক্ত ১১০০ ব্যক্তির বিচার প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে হবে। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের ওপর জামায়াত-শিবিরের আক্রমণ, নির্যাতন সবাইকে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান তারা।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক এ ইলাহী, সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল হারুন অর রশীদ, লে. কর্নেল (অব) এস আই এম নুরুন্নবী খান বীর বিক্রম, মাহবুবুর রব সাদী বীর প্রতীক, সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব) আবু সাইদ, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকার নক্সাকারক শিবনারায়ণ দাস, হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম, আঃ রহমান (মামা), এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম স্বপন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আক্কু চৌধুরী, ফরওয়ার্ড পার্টির সভাপতি মোস্তফা আমিনসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন