বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৩

প্রাণনাশের হুমকিতে ভীত সাক্ষী | ডিসি-এসপিদের আবার চিঠি

ওমর ফারুক
মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ খানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিরাপত্তা চেয়ে তিনি গত ২১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ কথা জানা গেছে।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ খান। তিনি গত বছর ৩ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি জানান, কাদের মোল্লার নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর (বর্তমানে শহীদনগর) ও কলাতিয়া এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তিনি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কাদের মোল্লার বিচার দাবি করেন।

নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আবেদনে ঢাকায় বসবাসকারী মোজাফফর আহমেদ খান জানান, তাঁকে কয়েক দিন ধরে ফোনে ও এসএমএসের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নিরাপত্তা চেয়ে মোজাফফর আহমেদ খানের আবেদনটি পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'

গতকাল বিকেলে মোজাফফর আহমেদ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সাক্ষ্য দিয়ে আসার পর থেকে ফোনের মাধ্যমে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একাত্তরে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখন আবার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।'

এদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আবারও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এবং পাবনার ডিসি ও এসপির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ২৪ মার্চ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লা স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চিঠিটি পাঠানো হয়। এর আগে গত ১৪ মার্চ সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতে দেশের ১২টি জেলার ডিসি ও এসপির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ওই সময় ঢাকা ও পাবনায় থাকা সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যও নির্দেশনা পাঠানো হয়েছিল। সর্বশেষ চিঠিতে সাক্ষীদের সুরক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

পাবনার পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেয়েছি। পুলিশের তরফ থেকে প্রত্যেক সাক্ষীকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।'

সূত্র জানায়, কদিন আগে পাবনা এলাকায় ৩৭ জন ও ঢাকার ১০ জন সাক্ষীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার এক কর্মকর্তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই নতুন করে ডিএমপি কমিশনার ও পাবনার জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দেশে চার শতাধিক সাক্ষী রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি সাক্ষী রয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পিরোজপুর, ফরিদপুর, শেরপুর, পাবনা, রংপুর, জয়পুরহাট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায়।
 
Source: http://www.kalerkantho.com/?view=details&type=gold&data=news&pub_no=1195&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=12

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন