শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৩

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবি সোহাগপুরবাসীর

শেরপুর প্রতিনিধি,  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর বিধবা পল্লীতে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে।

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় শহীদ বেদিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে। সোহাগপুরের স্বামীহারা বিধবা, শহীদ পরিবারের সদস্য, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।

সমাবেশে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরের ঘাতকদের পাশাপাশি এখন যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সেই জামায়াত-শিবির চক্রের বিচার করতে হবে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

“সেইসঙ্গে তাদের ফ্যাসিস্ট মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর চেয়ে সরকারের সামনে জরুরি কাজ আর কোনটাই নয়।”

সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলার মটিতে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির স্থান কোন দিনই হবে না। বাংলাদেশের জনগণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই ‘অশুভ শক্তিকে’ প্রতিহত ও পরাভূত করবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবির নতুন করে দেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ করার তৎপরতায় মেতে উঠেছে। তারা শহীদ মিনার ভাঙছে, জাতীয় পতাকা ছিড়ছে এবং একাত্তরের কায়দায় আবারও হত্যা, অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে।

নালিতাবাড়ি উপজেলা ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’র আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন আহমেদের  সভাপতিত্বে গণজাগরণ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, নালিতাবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকছেদুর রহমান লেবু, জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক ভাষাসৈনিক মো. আব্দুর রশীদ, নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, শহীদ পরিবারের সদস্য জালাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম ফারুক প্রমুখ।

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি শুরু হয়। স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এবং ময়নমনসিংহ উদীচী’র শিল্পীরা দেশাত্ববোধক ও গণসংগীত পরিবেশন করেন। ৭১’র শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কৃষকের ছদ্মবেশে নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা লুকিয়ে আছে, এই অজুহাতে স্থানীয় রাজাকার-আলবদরদের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে ১৮৭ জন নিরীহ পুরুষ ও শিশুকে। এরপর থেকেই পুরুষশূন্য এই গ্রামটির নাম হয় সোহাগপুর ‘বিধবা পল্লী’।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন