একরামুল হক শামীম
২০১২ সালের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সোপা এবং পিপা বিলের বিরুদ্ধে
অবস্থান নিয়েছিল উইকিপিডিয়া, গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু, এওএল, ইবে, লিংকডইন,
মজিলা, টুইটার ও জিঙ্গার মতো জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলো। ইংরেজি উইকিপিডিয়া ১৮
জানুয়ারি ২৪ ঘণ্টাব্যাপী ব্ল্যাকআউট পালন করেছিল। এ সময় উইকিপিডিয়ার প্রথম
পাতা কালো করে রাখা হয়েছিল। তাতে বড় অক্ষরে লেখা ছিল_ 'ইমাজিন অ্যা
ওয়ার্ল্ড উইদাউট অ্যা ফ্রি নলেজ'।
সেই প্রতিবাদের ঢেউ বাংলাদেশে এসেও পড়েছিল। কথা হচ্ছে ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে কেন এক দেশের আন্দোলন অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে? উত্তরটা জানা, ইন্টারনেটের কোনো সীমানা নেই। ২০১২ সালে ভারতের একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ২১টি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল। তার মধ্যে ফেসবুক, গুগল, ইয়াহু, মাইক্রোসফট এবং ইউটিউবের মতো সাইট ছিল। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট সমনে জানিয়েছিলেন, ২১টি ওয়েবসাইট থেকে সব মর্যাদাহানিকর তথ্য মুছে ফেলতে হবে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তখন গুগল নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছিল। গুগলের চিফ বিজনেস অফিসার নিকেশ আরোরা তখন বলেছিলেন, একতরফা দোষারোপ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। ইন্টারনেটের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক আলোচনা ও বিতর্ক। একটি বিষয় নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিতর্ক হলেই কেবল সঠিক ফলাফলে পেঁৗছানো সম্ভব। নিকেশ আরোরার বক্তব্য, আমরা ওয়েবের সেন্সর করতে পারি না। পৃথিবীব্যাপী মানুষ যেভাবে ওয়েবে নিজেদের মত তুলে ধরছে তার নিয়ন্ত্রণ আমরা করতে পারি না। আদালত আমাদের ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সেন্সর করতে বলেছেন। কিন্তু যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে, ওয়েবের কোনো সীমানা নেই।
সেই প্রতিবাদের ঢেউ বাংলাদেশে এসেও পড়েছিল। কথা হচ্ছে ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে কেন এক দেশের আন্দোলন অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে? উত্তরটা জানা, ইন্টারনেটের কোনো সীমানা নেই। ২০১২ সালে ভারতের একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ২১টি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল। তার মধ্যে ফেসবুক, গুগল, ইয়াহু, মাইক্রোসফট এবং ইউটিউবের মতো সাইট ছিল। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট সমনে জানিয়েছিলেন, ২১টি ওয়েবসাইট থেকে সব মর্যাদাহানিকর তথ্য মুছে ফেলতে হবে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তখন গুগল নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছিল। গুগলের চিফ বিজনেস অফিসার নিকেশ আরোরা তখন বলেছিলেন, একতরফা দোষারোপ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। ইন্টারনেটের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক আলোচনা ও বিতর্ক। একটি বিষয় নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিতর্ক হলেই কেবল সঠিক ফলাফলে পেঁৗছানো সম্ভব। নিকেশ আরোরার বক্তব্য, আমরা ওয়েবের সেন্সর করতে পারি না। পৃথিবীব্যাপী মানুষ যেভাবে ওয়েবে নিজেদের মত তুলে ধরছে তার নিয়ন্ত্রণ আমরা করতে পারি না। আদালত আমাদের ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সেন্সর করতে বলেছেন। কিন্তু যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে, ওয়েবের কোনো সীমানা নেই।
বাংলা ব্লগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে সবসময়ই ব্লগাররা বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাহলে বাংলা ব্লগের নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে আবারও আলোচনা তৈরি হচ্ছে কেন? এই আলোচনার উৎস বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কর্তৃক ই-মেইলে প্রেরিত একটি নির্দেশনা। সহকারী পরিচালক স্বাক্ষরিত এই ই-মেইল নির্দেশনায় ব্লগ কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কয়েকজন ব্লগারের অ্যাকাউন্ট বাতিল এবং সেসব ব্লগারের ব্যক্তিগত তথ্যাদি অর্থাৎ আইডি অ্যাড্রেস, ঠিকানা, ই-মেইল, মূল নাম ও মোবাইল নম্বর বিটিআরসির কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়। এ ক্ষেত্রে কোন আইনে কিংবা আদালতের কোন আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসি এমন অবস্থান গ্রহণ করেছে তা জানা যায়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপারটি বাংলা ব্লগের নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে হাজির হয়েছে ব্লগারদের সামনে।
বলে নেওয়া ভালো, বিটিআরসি সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সিএসআইআরটি) নামে একটি বিশেষ টিম গঠন করে। নামে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ থাকলেও আদতে এই বিশেষ টিমের মূল কাজ 'রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ' ছড়ায় এমন ওয়েবসাইটগুলো শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। মূল কাজের পরিধি বিশ্লেষণ করলেই বোধগম্য হয়, বিশেষ এই টিম বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে যে বিষয়গুলো সাইবার ক্রাইম হিসেবে আলোচিত সে ব্যাপারে কার্যপরিধিতে কোনো আলোচনা নেই, অথচ আলোচনা আছে রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষের ব্যাপারে। সমাজ বা রাজনৈতিক বিদ্বেষের পরিসীমা কে ঠিক করে দেবে?
বাংলায় ব্লগিংয়ের চর্চার শুরু থেকেই এটি কমিউনিটি ব্লগিং চরিত্র ধারণ করেছে। এখানে ব্যক্তিগত ব্লগের চেয়ে কমিউনিটি ব্লগের জনপ্রিয়তা বেশি। ব্লগে আপত্তিকর কিছু লেখা হলে ব্লগ কমিউনিটির ভিতর থেকেই তার প্রতিবাদ হয়। এই প্রতিবাদ প্রক্রিয়াকে সঙ্গে নিয়েই বাংলা ব্লগ এগিয়ে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি প্রতিটি ব্লগেরই কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। এই নিয়মকানুনের ব্যত্যয় ঘটলে ব্লগ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মনে রাখা উচিত, ব্লগারদের মাধ্যমেই শাহবাগ আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। মুক্তমত প্রকাশের এই প্ল্যাটফর্ম গত ৭ বছরের বেশি সময়ের পরিশ্রমের অর্জন। কোনো ধরনের রাজনৈতিক খেলার অংশ হিসেবে ব্লগের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করলে তাতে হিতে বিপরীত হবে। ব্লগের অন্তর্গত কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখা উচিত। সংবাদপত্রের মানের সঙ্গে ব্লগের মানের তুলনা করে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ যুক্তিসঙ্গত হবে না। মুক্তমত প্রকাশের এই প্ল্যাটফর্মকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন