শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৩

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে ব্লগাররা লড়েছে লড়ছে লড়বে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: দেশবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্রে ব্লগাররা সবসময় মুখর থেকেছে, লড়েছে, লড়ছে এবং লড়বে। শনিবার ভোরে মুক্তচিন্তার ব্লগগুলোর পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা বাংলার মুক্তচিন্তার ব্লগগুলোর পক্ষ থেকে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, ৬ এপ্রিলের হরতাল সফল করুন এবং সর্বস্তরে সর্বাত্মক গণ-প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।


আপনারা জানেন যে, ৪ এপ্রিল ২০১৩, বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা ব্ল্যাক আউটে আছি, আমাদের সম্মিলিত এই অবস্থানকে আরও জোরালোভাবে জানাতে।
সাইট ব্লগ-আউট মানে সাইট বন্ধ করা নয়। আমরা সব সাইট খোলা রেখেছি। শুধু আমাদের প্রতিবাদ ও অবস্থান জানাতে সুনির্দিষ্ট দু`টি বক্তব্য সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রচার করতেই এই ব্ল্যাক-আউট।

ব্লগাররা বলেন, সরকারের মৌলবাদ তোষণ, ব্লগার গ্রেপ্তার ও নির্যাতন এবং ব্লগ প্লাটফর্মগুলোর প্রতি হয়রানির প্রতিবাদে এবং মুক্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতার সপক্ষে এই ব্ল্যাক-আউট।
আদিবাসী বাংলা ব্লগ, আমারব্লগ, আমরাবন্ধু, ইস্টিশন, উম্মোচন, ক্যাডেট কলেজ ব্লগ, চতূর্মাত্রিক, নাগরিকব্লগ, প্রযুক্তিবার্তা, বিজ্ঞানস্কুলব্লগ, মুক্তমনা, মুক্তাঙ্গন, মুক্তচিন্তাব্লগ, সচলায়তন, সরব এবং স্বাধীনবাংলাস্টেশন এই প্রতিবাদী ব্ল্যাক-আউটে যোগ দিয়ে ব্লগ-সাইট অফ করে প্রতিবাদী ব্যানার ঝুলিয়েছে।

নীড়পাতা, রাতমজুর, বন্দনাকবির, গুরুভাই, একুয়ারিজিয়া, রাইয়ানহাসান, স্বপ্নবাজসহ, মেঘ অদিতিব্লগ ইত্যাদিসহ এই প্রতিবাদে যোগ দিয়েছে অসংখ্য ব্যক্তিগত ব্লগ।

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষ যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যখন ব্লগে এবং অনলাইনে মিথ্যাচারের মাধ্যমে তরুণ এবং আগামী প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের মিথ্যে ইতিহাস এবং সাম্প্রদায়িক চেতনা ছড়িয়ে দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছিলো, ব্লগারদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের শুরু তখন থেকে।
বছরের পর বছর ধরে ব্লগাররা নিরলস পরিশ্রমে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে অনলাইনে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির চেতনা সমুন্নত রেখেছেন। এখনো রাখছেন, ভবিষ্যতেও রাখবেন।

তার‍া বলেন, দেশবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্রে ব্লগাররা সবসময় মুখর থেকেছে, লড়েছে, লড়ছে এবং লড়বে। ব্লগারদের ব্লগের ভাষা কেউ কেড়ে নিতে পারেনি। পারবে না।
মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই যে নতুন প্রজন্মটি গড়ে উঠেছে, তা একদিনে গড়ে ওঠেনি, এমনি এমনি গড়ে ওঠেনি। রাজনীতিবিদরা যখন ভোটের হিসেবে মগ্ন থেকেছেন, তখন ব্লগাররা অহর্নিশ আগলে রেখেছেন অনলাইনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, প্রতিষ্ঠিত করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। বছরের পর বছর ধরে ব্লগাররা অক্লান্ত পরিশ্রমে তিলে তিলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই চেতনা জাগ্রত করেছেন, ছড়িয়ে দিয়েছেন।
এবং এটা আজ প্রমাণিত যে এই নতুন প্রজন্ম এখন ভোটের হিসাব পাল্টে দিতে সক্ষম, গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম, দেশবিরোধী যে কোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম।
আর তাই যুদ্ধাপরাধী শক্তি জামায়াত-শিবির চক্র উঠে পড়ে লেগেছে ‘ব্লগার’দের বিরুদ্ধে, তারা খুব ভালো করে জানে, যে কোনো মূল্যে ব্লগারদের ঠেকিয়ে দিতে পারলেই যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিকে দুর্বল করে ফেলা যাবে। তাই শুরু করেছে অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র। ব্যবহার করছে ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তিকে। বিভিন্ন অপপ্রচারে ব্লগারদের বিরুদ্ধে নেমেছে তারা। জবাই করছে, হুমকি দিচ্ছে, তালিকা করছে। আর আমরা অবাক হয়ে দেখতে পাচ্ছি সরকার নিজেও আজ নেমেছে ব্লগারদের বিরুদ্ধে! ব্লগারদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, দাগী আসামিদের মতো মিডিয়ার সামনে হাজির করা হচ্ছে, বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ব্লগ-সাইট, বন্ধ করতে বলছে গণ-জাগরণ মঞ্চ!

ব্লগাররা আরো বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে ব্লগারদের সসম্মানে মুক্তি চাইছি। ব্লগারদের বাক স্বাধীনতায় বাধা না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ব্লগ-সাইটগুলোকে স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। নির্মূল করতে হবে মৌলবাদী অপশক্তিকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন