শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৩

এই প্রথম দেশে অহিংস হরতাল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: একের পর এক সহিংস হরতালের পর এবার অহিংস হরতাল দেখছে বাংলাদেশ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ২৪ ঘণ্টার এই হরতাল শুরু হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যা ছ’টায়।

এ হরতাল শুরুর আগে তো বটেই, রাত সাড়ে ন’টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত কোন গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ভাঙচুর হয় নি কোন গাড়ি বা দোকানপাট। এমন ঘটনা বিরলই বটে।

এর ফলে এই প্রথম অহিংস হরতালের নজির যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি সন্ধ্যা ছ’টায় হরতাল শুরুরও প্রথম নজির হয়ে উঠেছে শুক্রবারের কর্মসূচি।

সন্ধ্যায় হরতাল শুরুর আগে কর্মীদের কোন জ্বালাও পোড়াও বা ভাঙচুরের পথ না মাড়ানোর আহবান জানান এ কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।

তিনি এও বলেন, “এ হরতাল ভাঙচুরের নয়। আমরা কোন ভাঙচুর করবো না। কেউ গাড়ি বের করলে তাকে জিজ্ঞাসা করবো, কোন জরুরি কাজ আছে কি না। না থাকলে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করবো।”

হরতালের রাজপথে গাড়িচালকের জরুরি কাজের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার এমন উদারতাও সম্ভবত আর কখনো দেখেনি বাংলাদেশ।

তবে এমন অহিংস পরিস্থিতির সুযোগে রাস্তায় নিরাপদে নামার যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হলেও তা কাজে লাগানোর খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না গাড়ি মালিকরা। বরং হরতালের প্রতি সম্মান দেখিয়ে অনেকেই গাড়ি বসিয়ে রেখেছেন গ্যারেজে।


এছাড়া এ হরতালের কারণে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে কোন অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি। শাকসবজি ও কাঁচামালের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে হরতালের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণাকারী ব্যক্তি ও সংগঠনের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এ হরতালে সমর্থন ও সংহতি জানিয়েছে ২৭টি সংগঠন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া হরতালের মশাল মিছিলে যোগ দিয়েছে তারা। অংশ নিয়েছে সাংগঠনিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের ব্লগার, রাজধানীর বিভিন্ন থিয়েটার ও কবিতা সংগঠন।

এসেছে ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, বাসদ, যুব মৈত্রী, ছাত্র মৈত্রী, কাজী আরেফ ফাউন্ডেশন, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের মিছিলও।

সব মিলিয়ে প্রগতিশীলদের যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে প্রথমবারের মতো সন্ধ্যা ছ’টা থেকে শুরু হওয়া হরতালের ময়দান।

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ ও হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ বাতিলের দাবিতে ডাকা এ হরতাল তাই সত্যিকার অর্থেই অহিংস আন্দোলনের অনন্য নজির হয়ে থাকছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন