বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৩

জামায়াত শিবিরের তাণ্ডবে সরকারের অর্জন ম্লান

ঢাকা: গত কয়েক মাস ধরে সারা দেশে জামায়াত শিবিরের তাণ্ডবে সরকারের অর্জনগুলো ম্লান হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মোট ১৯৬টি আইন পাশ করেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগ আইনই মানবাধিকারকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু গত দু’মাসে সারা দেশে জামায়াত শিবির যে তাণ্ডব চালিয়েছে তাতে এসব অর্জন ম্লান হয়ে গেছে।


মঙ্গলবার বিকেলে হোটেল রূপসী বাংলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (সেকেন্ড সাইকেল)’ শীর্ষক এক পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পর্যালোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি নীল ওয়াকার, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ও সদস্য কাজী রেজাউল হক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর জেনেভায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের কাছে মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সরকার। আগামী ২৯ এপ্রিল দ্বিতীয় সাইকেলেও এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জামায়াত-শিবিরের সাম্প্রতিক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তারা সাম্প্রতিক সময়ে যে তাণ্ডব চালাচ্ছে তা একাত্তর সালের গণহত্যাকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

জামায়াত শিবিরের তাণ্ডবে সরকার নীরব ভূমিকা পালন করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন দীপু মনি।

তিনি বলেন, দায়মুক্তির জন্য যুদ্ধাপরাধীদের‍ বিচার ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার চলছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে গোটা বাংলাদেশে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ শাহবাগের অহিংস আন্দোলন।

হেফাজতে ইসলামের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “হেফাজতে ইসলাম যে দাবি করেছে সে দাবি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নের মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি জানান, জেনেভায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনে যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে তার মূলমন্ত্র হবে ‘বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দেশ’।

ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি নীল ওয়াকার বলেন, “বাংলাদেশে নারীনীতি, শ্রম আইনসহ পারিবারিক সহিংসতারোধ ও মানবাধিকার রক্ষায় অনেক আইন প্রণীত হয়েছে। এসব আইন মানবাধিকার রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”

তবে আইন এবং আইনের প্রয়োগের মধ্যে এখনও অনেক দূরত্ব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ওয়াকার। তিনি বলেন, “এসব বিষয়ে বাংলাদেশকে আরও বেশি কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।”

আইনকে বাস্তব রূপ দিতে প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা ও পুলিশি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ওপরও জোর দেন তিনি।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, “পাঁচ বছর আগেও মানবাধিকার বিষয়ে সরকার তথা সকলের মধ্যে যে গোপনীয়তা ছিল সেটি এখন আর নেই।”

তবে কাজী রেজাউল হক বলেন, “বিচার বহির্ভূত হত্যা ও পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন