রিফাত মুনীর ইতি
ওরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। ওরা চোখের সামনে নরহত্যা, সম্পদ বিনষ্ট হওয়া
কিংবা ধর্ষিত নারীর হাহাকার দেখেনি। ওরা বেড়ে উঠেছে এক মুক্ত পরিবেশে, এক
মুক্ত বাংলাদেশে। প্রযুক্তিগত শিক্ষা পেয়েছে ওরা। আধুনিকতা আর উদারতার
মিশেলে ওদের মন নতুন কিছু গ্রহণের আকাঙ্ক্ষায় ছিল ব্যাকুল। এই যে
স্বাধীনতার পরের এক সাহসী প্রজন্ম, তারা শিক্ষা, সচেতনতা ও সামাজিক নানা
জটিলতায় এই যান্ত্রিক যুগেও কিন্তু ভীষণ মানবিক ও সহমর্মী। আর তাই না দেখা
মুক্তিযুদ্ধ ছাপ ফেলেছে ওদের অন্তরে। যুদ্ধের ইতিহাস শুনেই ওরা বুঝতে
পেরেছে মুক্তিকামী মানুষের কষ্ট। ঘৃণা করতে শিখেছে মানবতাবিরোধীদের।
দেশমাতৃকার টানে এই যে প্রজন্মের জাগরণ, এটা সত্যিই অভিভূত, আশান্বিত করেছে
জনসাধারণকে।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর আজ শুধু একটি প্রতীকই নয়, সত্যি সত্যি এটি গণজাগরণ ঘটিয়েছে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। প্রযুক্তি সহায়ক হয়েছে মানুষের। তার চেয়েও বড় কথা, মানুষ অন্তরের ডাককে উপেক্ষা করতে পারেনি। তার ফল আমরা দেখছি, ভবিষ্যতেও হয়তো দেখব। যে কোনো দেশের তরুণ ও যুবসমাজ সে দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। দলীয় রাজনৈতিক বেড়াজাল ভেঙে ওরা প্রমাণ করেছে_ শুধু দেশের স্বার্থে, দেশমাতৃকার কথা ভেবেই একতাবদ্ধ হওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা, প্রজন্ম আমাদের বুঝিয়েছে তারা সচেতন, তারা সমসাময়িক। তারা এ সমস্যাসংকুল ছোট্ট দেশটির নানা জটিলতা লক্ষ্য করে অত্যন্ত সুতীক্ষষ্টভাবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তাই তাদের একত্রিত আন্দোলন সাড়া ফেলেছে সাধারণ মানুষের অন্তরে।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর আজ শুধু একটি প্রতীকই নয়, সত্যি সত্যি এটি গণজাগরণ ঘটিয়েছে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। প্রযুক্তি সহায়ক হয়েছে মানুষের। তার চেয়েও বড় কথা, মানুষ অন্তরের ডাককে উপেক্ষা করতে পারেনি। তার ফল আমরা দেখছি, ভবিষ্যতেও হয়তো দেখব। যে কোনো দেশের তরুণ ও যুবসমাজ সে দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। দলীয় রাজনৈতিক বেড়াজাল ভেঙে ওরা প্রমাণ করেছে_ শুধু দেশের স্বার্থে, দেশমাতৃকার কথা ভেবেই একতাবদ্ধ হওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা, প্রজন্ম আমাদের বুঝিয়েছে তারা সচেতন, তারা সমসাময়িক। তারা এ সমস্যাসংকুল ছোট্ট দেশটির নানা জটিলতা লক্ষ্য করে অত্যন্ত সুতীক্ষষ্টভাবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তাই তাদের একত্রিত আন্দোলন সাড়া ফেলেছে সাধারণ মানুষের অন্তরে।
আগেই উল্লেখ করেছি, দেশটা সমস্যাসংকুল। স্বাধীনতার এত বছর পার হওয়ার পরও আমাদের আসেনি অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা পুরোপুরি সাংস্কৃতিক মুক্তি। বাংলাদেশ সম্প্রতি ভুগছে সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, উপাসনালয়গুলোতে হামলা; ধর্ম নিয়ে অশ্লীল, কদর্য ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অপপ্রচার, তথা ধর্মব্যবসাসহ নানা সমস্যায়। আর জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে যারা দেশ, জাতি ও দেশের সম্পদকে বিনষ্ট করার নোংরা খেলায় ব্যস্ত, তরুণ সমাজের একতাবদ্ধ দৃঢ় প্রতিবাদ তাদেরই বিরুদ্ধে। তরুণ প্রজন্ম প্রমাণ করতে চায়, তাদের আন্দোলন আসলে এক প্রকৃত আত্মিক মুক্তির। যে দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতা, আত্মার সংকীর্ণতা মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে, আগে তার বিনাশ চাই। আত্মার সেই মুক্তিই এনে দেবে একটা স্বাবলম্বী, সচ্ছল দেশের স্বপ্ন; যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে প্রজন্ম, প্রজন্মের অগ্রনায়করা। একাত্তরে কিছু জাগরণী গান মুক্তিযোদ্ধাদের আলোড়িত করেছিল তাদের সম্মুখ সমরে। তাদের অসীম সাহসী হতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। ভাবতে অবাক লাগে, স্বাধীনতার চার দশক পেরিয়ে আজ তেমনই একটি গানের কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। শান্ত ছেলেগুলো রাজনৈতিক দলের পরিচয় ছাড়া; কোনো আন্দোলন, প্রতিবাদ করার পূর্ব ইতিহাস ছাড়া; অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অংশ নেওয়ার পূর্বঅভিজ্ঞতা ছাড়াই আজ দেশের পাশে। দেশকে আশ্বস্ত করে তাদের আমরণ সংগ্রামের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ; আন্দোলনের নতুন, গ্রহণযোগ্য ও স্বাভাবিক কর্মসূচি গ্রহণ করে তারা দেখিয়েছে সহিংসতা ছাড়াও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব।
অভিবাদন প্রজন্ম! এগিয়ে যাও।
রিফাত মুনীর ইতি : কলাম লেখক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন