বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৩

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কাল ‘শান্তি পদযাত্রা’

ঢাকাঃ সারাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, তাদের ধর্মীয় উপাসনালয় ও স্থাপনার ওপর নগ্ন হামলা দেশবাসীকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা। এসব ঘটনার জন্য সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও তাঁদের পৃষ্ঠপোষকদের দায়ী করে তাঁরা বলেছেন, পূর্বপরিকল্পিত এই সহিংসতা রোধ ও সংখ্যালঘুসহ সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা প্রদানে রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ঢাকায় কর্মরত সংক্ষুব্ধ সাংবাদিকবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশে তাঁরা এসব কথা বলেন। সমাবেশ থেকে আগামীকাল ২৯ মার্চ শুক্রবার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হতে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ‘শান্তি পদযাত্রা’ কর্মসূচী ঘোষণাসহ সরকারের উদ্দেশে সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সমাবেশ শেষে পিটিবি নিউজ২৪.কম সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই কর্মসূচী ঘোষণা করেন।

জনকণ্ঠ সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণঐক্য সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব আব্দুল জলিল ভুঁইয়া, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, কেন্দ্রীয় খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভুঁইয়া, শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ সংগঠক সাকিল আহমেদ অরণ্য, সাংবাদিক শেখ মামনুর রশীদ, এনায়েত ফেরদৌস, গণ ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম পথিক, দৈনিক মানবকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সেকান্দার হায়াত, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, দেশপ্রেমিক জনগণের মঞ্চর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, তুষার রেহমান, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এমএ আউয়াল, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক তপন বিশ্বাস, মধুসূদন ম-ল, মীর লিয়াকত আলী, পরিতোষ কুমার রায় তুষার, সৈয়দ আহমেদ অটল, রফিকুল ইসলাম সবুজ, বিশ্বজিত দত্ত, বিভাষ বাড়ৈ, নিখিল মানখিন, শাহ আলম খান, রশিদ মামুন, অপূর্ব কুমার, শাজাহান সাজু, মহিউদ্দিন আহমেদ, আরাফত মুন্না, আফজাল হোসেন, মামুন ফরাজী, সুরক্ষা ও অগ্রগতি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জীবনানন্দ জয়ন্ত, ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা হীরক পাশা প্রমুখ।

সমাবেশ থেকে দেশব্যাপী ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে সরকারের উদ্দেশে সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু নির্যাতন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংখ্যালঘুসহ সকল ধর্মের মানুষ ও ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে অবিলম্বে মহামান্য রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে প্রয়োজনীয়সংখ্যক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা, বিচারের নামে যাতে কালক্ষেপণ না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করা, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ও তাদের ধর্মীয় স্থাপনায় হামলাসহ সম্প্রতি সরকারী-বেসরকারী সম্পদ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করে যতদ্রুত সম্ভব তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়, নিহত ও আহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো পুনর্নির্মাণে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

এসব দাবির সমর্থনে আগামী ২৯ মার্চ শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মাথায় সাদা কাপড় মুড়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ‘শান্তি পদযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে। একই দাবিতে পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট দিন নির্ধারণ করে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের উদ্যোগে স্ব স্ব এলাকার শহীদ মিনার থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত ‘শান্তি পদযাত্রা’ হবে। ঢাকাসহ সারা দেশের এসব কর্মসূচীতে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র, যুব, মহিলা, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার সকলকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান আয়োজকরা।
স্টাফ রিপোর্টার, জনকণ্ঠ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন