বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৩

জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল, আদালতের জন্য মতামত তৈরি করছে ইসি

গণজাগরণ মঞ্চ সংবাদ
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের মত জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত। আর নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে একটি মতামত তৈরির কাজ শুরু করেছে। ৯ এপ্রিলের মধ্যে তা আদালতে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ

ঢাকা টাইমসকে এই কমিশনার বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের আইন, জামায়াতের গঠনতন্ত্রসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করছি। এসব বিষয়ে মতামত তৈরির কাজও শুরু করেছি। চুড়ান্ত মতামত দ্রুত শেষ করে তা আদালতে পাঠানো হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের আমির, নায়েব আমির, সেক্রেটারি জেনারেলসহ ছয়টজনের বিচার চলছে। সাবেক আমির গোলাম আযমও আছেন এই তালিকায়। আর অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় নায়েব আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসি এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দলটির দলটির সাবেক রোকন আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধেও ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে।

আবুল কালাম আযাদ এবং কাদের মোল্লার রায়ের পর্যবেক্ষণে মুক্তিযুদ্ধের পর দল হিসেবে জামায়াতের অপরাধের বিষয়টি উঠে এসেছে। এ জন্য দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তুতি চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

অন্যদিকে সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর দেশব্যাপী বেপরোয়া সন্ত্রাসের পর জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জোরাল হয়েছে। এরই মধ্যে ২০০৯ সালে দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের একটি রিট আবেদনের শুনানি চলছে।

দুই দফা শুনানির পর এই আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। আর এই পর্যায়ে শুনানি স্থগিত রেখে নির্বাচন কমিশনের মতামত চেয়েছে আদালত।

জামায়াতের গঠনতন্ত্রে সংবিধানবিরোধী অন্তত ছয়টি ধারা রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গঠনতন্ত্র দুই দফা সংশোধনীর পরও এই ধারাগুলো বাদ দেয়নি জামায়াত।

নির্বাচন কমিশন জানায়, ২০০৮ সালে নিবন্ধন বাতিলের জন্য জামায়াত তার গঠনতন্ত্র থেকে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে। কিন্তু যে গঠনতন্ত্র তারা কমিশনে জমা দেয় তাতেও রয়ে যায় নানা অসঙ্গতি। এরপর কমিশনের নির্দেশ পেয়ে আবার গঠনতন্ত্র সংশোধন করে দলটি।

কিন্তু সর্বশেষ সংশোধনীর পরও গঠনতন্ত্রের মৌলিক আকিদা বিভাগের ২ (২) ধারায় বলা আছে, ‘সকল প্রকার ক্ষমতা ও এখতিয়ার একমাত্র আল্লাহ’।

আবার গঠনতন্ত্রের ২ (৫) ধারায় বলা আছে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক বলে মেনে নেবে না। কাউকে নিজস্বভাবে আদেশ ও নিষেধ করার অধিকারী মনে করবে না।

অথচ বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ এবং জনগণই সব ক্ষমতার উৎস।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন