বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৩

শাহবাগের সমাবেশ থেকে কাল নতুন কর্মসূচী ঘোষণা

জনকণ্ঠ | স্টাফ রিপোর্টার ॥ সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিসহ দেশবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে অত্যন্ত পরিকল্পিত, সুশৃঙ্খল ও সুদূরপ্রসারী আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আগামী দিনে মাঠে থাকতে চায় গণজাগরণ মঞ্চ। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী সর্বস্তরের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে কীভাবে এই আন্দোলনের সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা যায় তার রূপরেখা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তারা। প্রতিদিনই ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহর, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে উদ্যোক্তাদের মতবিনিময় চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের ৪৪তম দিন বুধবার দেশের সকল জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজও একই স্থানে দেশের সকল গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে গণজাগরণ মঞ্চের মতবিনিময় হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে প্রজন্ম চত্বর শাহবাগে আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে সমাবেশ। এই সমাবেশ থেকেই ঘোষণা দেয়া হবে পরবর্তী কর্মসূচীর রূপরেখা। আর ওই সমাবেশ থেকে কী কর্মসূচী দেয়া যেতে পারে সে বিষয়েও নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ চলছে।

তবে আন্দোলনের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আগামীতে তাদের আন্দোলন আরও তীব্র হতে যাচ্ছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কিন্তু সেই আন্দোলন হবে অহিংস ও শান্তিপূর্ণ। আর তাদের এই অহিংস আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দুই হচ্ছে চেতনায় ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ। এক্ষেত্রে যত বাঁধাই আসুক, তারা পিছপা হবেন না। জনতার সংহতিই তাদের শক্তি।
ওদিকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী আগামী ২২ মার্চ সমাবেশ থেকে ২৫ মার্চ কাল রাত্রিতে ’৭১-এর শহীদদের স্মরণে কর্মসূচী পালনের কথা জানিয়েছে উদ্যোক্তারা। জানা গেছে, ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে আলোর মিছিলে যোগ দেবে মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। একাত্তরে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হবে। পৃথকভাবেও কর্মসূচী পালনের পরিকল্পনাও চলছে। ২৬ মার্চ শাহবাগে মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হতে পারে। এতে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, বীরাঙ্গনা, সেক্টর কমান্ডার, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে যদিও চলমান আন্দোলনের ৪৪তম দিনেও ৬ দফা দাবি আদায়ে বুধবার গণজাগরণ মঞ্চে পূর্বনির্ধারিত কোনও কর্মসূচী ছিল না। তবে জাতীয় জাদুঘর থেকে টিএসসি মোড় পর্যন্ত রাস্তায় বুধবারও বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা জাগরণী গান ও চেতনার কথা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত ’৭১-এর ঘাতক ও কসাই কাদের হিসেবে পরিচিত কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায়ের প্রতিবাদে ব্লগার এ্যান্ড অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক নামে একটি সামাজিক সংগঠন শাহবাগের আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলন থেকে কাদের মোল্লাসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করাসহ ৬ দফা দাবি জানানো হয়। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানান। মুক্তিযোদ্ধারা চলমান এই আন্দোলনকে দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে অবহিত করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে আন্দোলন ছড়িয়ে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীরাও ৬ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। এক পর্যায়ে আন্দোলন বানচাল করতে জামায়াত-শিবিরসহ উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। আন্দোলনকারীদের নাস্তিক বলে আখ্যায়িত করে তারা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন