হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা মানলে এ দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত প্রায় ৩০ লাখ নারী বেকার হয়ে যাবে বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। কারণ হেফাজতে ইসলাম নারী ও পুরুষের একসঙ্গে কাজ করার বিরুদ্ধে। সংগঠনটি মূলত বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে বলে জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে 'ভিজিট বাংলাদেশ' কর্মসূচির অংশ হিসেব সফররত আট দেশের (যুক্তরাজ্য, জাপান, মিসর, ওমান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও বাহরাইন) ১০ জন সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা জানান। অনুষ্ঠানে তথ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গত দুই মাসে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় জামায়াত-শিবিরের হামলা সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত সফররত বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে দেওয়ার জন্য তথ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশ গণতান্ত্রিক ও উদার। সব ধর্মের মানুষ এ দেশে শান্তিপূর্ণভাবে যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে। যারা এ দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তারাই ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা করেছে। পরে তারা সামরিক শক্তির হাত ধরে লালিত-পালিত ও বিকশিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ওই অপশক্তি শুধু সরকার নয়, রাষ্ট্রকেও মানতে নারাজ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের সমর্থনে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই এ দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও দলগতভাবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এই দল সম্প্রতি হেফাজতকে মাঠে নামিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর রয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, জামায়াতের ইন্ধনে হেফাজতে ইসলাম নারী ও পুরুষের জন্য ভিন্ন কর্মস্থল রাখার দাবি তুলছে। এই দাবি দেশের সংবিধানের পরিপন্থী। জামায়াত দেশে সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছে। এটা দুঃখজনক।
তিনি বলেন, দেখতে হবে পুলিশ কোন অবস্থায় গুলি করেছে। পুলিশ বাধ্য হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করছেন। তাঁর জোটের বেশির ভাগ দল প্রগতিবিরোধী। খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করলেও তিনি সংসদে এসে তা উত্থাপন করেননি। বরং শুধু পদ ও পদবি রক্ষায় তিনি নামকাওয়াস্তে সংসদে যাচ্ছেন এবং রাজপথে আন্দোলন করছেন।
বর্তমান সহিংস পরিস্থিতির অবসান কবে হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শিগগির পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে। যারা অপরাধী, তাদের এরই মধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াতের সব নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাদের সব তৎপরতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সংবিধানের অধীনে সরকারের মেয়াদ শেষে যথাসময়ে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে এখন বিদেশিদের জন্য বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। জাপানের এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশিদের জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ এবং ভয়ের কোনো কারণ নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন