মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৩

যত নির্যাতন হোক সাংবাদিকদের লেখনী অব্যাহত থাকবে

কোনো সংগঠনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যদি সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়, তাহলে হামলাকারী সংগঠনের সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকতে সাংবাদিক সমাজ বাধ্য হবে। সাংবাদিকদের ওপর যত নির্যাতনই করা হোক না কেন, সাংবাদিকদের লেখনী অব্যাহত থাকবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক সমাবেশে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেন, জামায়াতপন্থীরা ১২ জন সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার জন্য তালিকা করেছে। কোনো সাংবাদিকের ওপর আঘাত এলে সাংবাদিক সমাজ দেশব্যাপী গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তাঁরা বলেন, সাংবাদিকেরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। এ ছাড়া ধর্মের কোন আয়াত বা বাণীতে প্রকাশ্যে নারীর গায়ে হাত দিয়ে নির্যাতন করার কথা বলা আছে, তা-ও তাঁরা জানতে চান হেফাজতে ইসলামের নেতাদের কাছে।
নারী সাংবাদিকের ওপর হামলা, গণমাধ্যমের গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সাংবাদিক নেতাদের পাশাপাশি সাংসদ, নারীনেত্রী, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতাসহ বিভিন্ন পেশা-শ্রেণীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল মজিদ সমাবেশটি পরিচালনা করেন।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার রাষ্ট্র করেনি। সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হয়নি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করার অপপ্রয়াসও চালানো হচ্ছে। একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনের ওপর নির্যাতন এ ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে যেসব দল ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, সেই সব রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার নেই।
সাংসদ তারানা হালিম বলেন, সংবিধানে নারী ও পুরুষের সমানাধিকার দেওয়া হয়েছে। কোনো ধর্মেই নারীকে নির্যাতন করার কথা বলা হয়নি। তাই নারী সাংবাদিকের ওপর হামলা সংবিধান ও ধর্মের ওপর আঘাত।
সাংবাদিক নেতা আবদুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বাস্তবায়িত হলে নারীর অধিকার তো দূরের কথা, পুরুষের অধিকারই রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
আলতাফ মাহমুদ বলেন, দেশের পোশাকশিল্পের নারী শ্রমিকেরা সমাবেশ করলে হেফাজতে ইসলামের চেয়ে বড় সমাবেশ হবে। হেফাজতে ইসলাম নারীর বিরুদ্ধে লেগেছে। বিরোধীদলীয় নেতা নারী না পুরুষ, তা নিয়েও প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা ইসলামের মূল চেতনার সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিক শাহ আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বর্তমানে ১৩ দফাকে সমর্থন দিয়েছেন। ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী হলে এই ১৩ দফা বাস্তবায়ন করতে পারবেন কি না, তা-ও জানতে চান তিনি।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক নারী সাংবাদিকসহ সব সাংবাদিকের নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতা শাহজাহান মিয়া, আতাউর রহমান, রফিক আহমেদ, শাবান মাহমুদ, কাজী রফিক, রফিকুল ইসলাম, শাহনাজ বেগম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন