মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৩

মানববন্ধনে শিক্ষকেরাঃ হেফাজতের ১৩ দফা দাবি অন্ধকার যুগের সনদ

হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি প্রতিহত করার ডাক দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী-বাম সমর্থক নীল দলের শিক্ষকেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজের ব্যানারে এক মানববন্ধন থেকে শতাধিক শিক্ষক এ ডাক দেন। তাঁরা হেফাজতের ১৩ দফা দাবিকে অন্ধকার যুগের সনদ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধন করা হয়। পরে শিক্ষকেরা একটি মৌন মিছিল নিয়ে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষকেরা বলেন, হেফাজতে ইসলামের পক্ষে যে দাবি জানানো হয়, তা এককথায় রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। মূলত, এটি বাংলাদেশকে একটি অন্ধকার যুগে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যখনই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দেওয়া শুরু হয়েছে, তখনই এসব ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করাই তাদের মূল লক্ষ্য। কোনোভাবেই এটি মেনে নেওয়া হবে না। এ জন্য যা করার, তা-ই করা হবে। প্রয়োজনে আবার যুদ্ধ করা হবে।’ হেফাজতে ইসলামের দাবির কাছে মাথা নত না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম ইমামুল হক বলেন, ধর্মান্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে দেশকে স্বাধীন করা হয়েছিল। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি রাষ্ট্রবিরোধী। জনগণকে বিভ্রান্ত করে কোনো আপসে না যেতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ভূলুণ্ঠিত করে নির্বাচনে জেতা সম্ভব নয়।
জসীমউদদীন হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের নামের মধ্যেই অবমাননা রয়েছে। কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, ইসলাম ধর্মের রক্ষক স্বয়ং আল্লাহ। সেখানে কোনো সংগঠন বা ব্যক্তির ইসলাম ধর্মকে হেফাজত করার কথা বলা ধৃষ্টতার শামিল। ’
শিক্ষক সমিতির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ব ম ফারুক বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চ যখন আন্দোলনে নামল, তখনই তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যেখানে তারা কখনো ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেনি, সেখানে তাদের নাস্তিক বানানো হলো। এখন এই ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন করা হলে তা হবে বাংলাদেশকে মধ্যযুগের দিকে ঠেলে দেওয়া।
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধন শেষে শিক্ষকেরা একটি মৌন মিছিল নিয়ে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে সংহতি প্রকাশ করেন। এ সময় তাঁদের হাতে ‘নারীনীতি ও শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করো’, ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বন্ধ করো’, ‘হেফাজতে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী প্রতিহত করো’, ও ‘মুক্তচিন্তার বাংলাদেশ চাই’—এমন বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার ছিল।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন নিমচন্দ্র ভৌমিক, আজিজুর রহমান, জিয়াউর রহমান, লালারুখ সেলিম, এ জেড এম শফিউর আলম ভূঁইয়া প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন