শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৩

জামায়াতী হতে সুন্নত পালন শর্ত নয় ॥ সগিরা গুনাহ্তে আপত্তি নেই

মুহম্মদ শফিকুর রহমান
আগে ছিল ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ এখন হয়েছে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’। সাবেক নামটি শুনলে সহজেই বোঝা যাবে এটি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন, এখানকার জামায়াত তার একটি শাখা ইউনিট। তাদের এই আন্তর্জাতিকীকরণের পেছনেও একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য রয়েছে। অর্থাৎ বহির্বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং সাহায্য সহযোগিতা আদায়, বিশেষ করে তেলসমৃদ্ধ উন্নত মুসলিম দেশগুলোর কাছ থেকে ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে অর্থ ভিক্ষে করা। এতে তারা সফলও কম হয়নি! এই যেমন পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে পাকিস্তানে ধর্মীয় দাঙ্গা বাধানোর দায়ে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আবুল-আলা মওদুদীর ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন সৌদি বাদশার হস্তক্ষেপে তার ফাঁসির হুকুম কার্যকর হতে পারেনি। তবে তখনই জামায়াতের আসল চেহারা জনসমক্ষে চলে আসে। অর্থাৎ এই জামায়াত একদিকে ১৯৪৭-এ যেমন পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছে। তেমনি ২৪ বছর পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। এ অর্থে এটিকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান না বলে ‘ভিক্ষা-ভিত্তিক সংগঠন’ বলা ভাল। যেহারে একটার পর একটা দোকান খুলে বসেছে তাতে করে ‘ব্যবসা-ভিত্তিক’ প্রতিষ্ঠানও বলা যেতে পারে।
জামায়াতের আরেকটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য হলো সমাজতান্ত্রিক এবং কমিউনিস্ট ধ্যান-ধারণার বিরোধিতাকারী হিসেবে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদের কাছে নিজেদের বিক্রয় এবং এর বিনিময়ে স্বার্থ আদায়; এক্ষেত্রে আমেরিকা হলো তাদের পেয়ারের রাষ্ট্র। বর্তমান ওবামা প্রশাসনও জামায়াতকে গভীরভাবে পেয়ার করে। মডারেট ইসলামিক ডেমোক্রেটিক খেতাব দেয়।
মাঝে-মাঝে ভাবতাম, ‘আহ্লে সুন্নত ওয়াল-জামায়াত’-এর উলামা-এ কিরাম বা পীর-মাশায়েখগণ কেন জামায়াতকে পছন্দ করেন না, বরং কড়া সমালোচক? কেউ কেউ বলেন জামায়াত হচ্ছে ‘ফিতনা-এ মওদুদী’ কেউবা ‘ওহাবী’ বলতেও ছাড়েন না। সম্প্রতি কম্পিউটারে জামায়াতের ওয়েভ সাইট থেকে লোড-ডাউন করা জামায়াতের গঠনতন্ত্র আমার হাতে আসে। তাতে চোখ বুলাতে গিয়ে অবাক হতে হলো। এখানে একটি উদারহণ দিচ্ছি :
“ জামায়াতের গঠনতন্ত্রের ধারা-৭ হলো এর
রুকন বা সদস্য হবার শর্তাবলী।
এতে বলা হয়েছে যে কোন সুস্থ বিবেক
বুদ্ধিসম্পন্ন ও পূর্ণ বয়স্ক নর-নারী এই
জামায়াতের সদস্য (রুকন) হইতে পারিবেন
যদি তিনি... (ধারা-৭-এর উপধারা-৪)
শরীয়তের নির্ধারিত ফরজ ও ওয়াজিবসমূহ
আদায় করেন এবং কবীরা গুণাহ হইতে
বিরত থাকেন।”
জামায়াতের সদস্য হবার জন্য মনোনীত হবার পর সংগঠনের আমির বা আমিরের প্রতিনিধির কাছে শপথ নিতে হয়। এই শপথবাক্যেও রয়েছে, (পরিশিষ্ট-১-সদস্যপদের (রুকনিয়াতের) শপথনামা :
“আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর গঠনতন্ত্রে
বর্ণিত আক্বীদা উহার ব্যাখ্যা সহকারে ভালভাবে
বুঝিয়ো লওয়ার পর আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনকে
সাক্ষী রাখিয়া পূর্ণ দায়িত্ববোধের সহিত
সাক্ষ্য দিতেছি যে, (পরিশিষ্ট-১ এর ২ ধারার
খ. উপরাধা) সর্বদাই শরীয়ত নির্ধারিত
ফরয-ওয়াজিবসমূহ রীতিমতো আদায়
কবির এবং কবীরা গুণাহসমূহ হইতে
বিরত থাকিব...।”
এ থেকে কি পরিষ্কার নয়, জামায়াত-শিবিরের সদস্য (রুকন) হতে হলে আল্লাহ্ পাকের ফরজ-ওয়াজিব তরফ করা যাবে না। কিন্তু আল্লাহ্র রাসূল মহানবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (স:)-এর সুন্নত তরক করলে ক্ষতি নেই। জামায়াত-শিবিরের সদস্য হতেও কোন বাধা নেই? একই সঙ্গে এ-ও পরিষ্কার নয় কি যে, কবীরা গুণাহ্ করা যাবে না, কিন্তু সগিরা গুণাহ করা যাবে,
এবং যারা এই সংগঠনের সদস্য হচ্ছেন তারা তো “গঠনতন্ত্রে বর্ণিত আক্বীদা উহার ব্যাখ্যা সহকারে ভালোভাবে বুঝিয়া লওয়ার পর আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনকে সাক্ষী রাখিয়া পূর্ণ দায়িত্ববোধের সহিত” শপথ গ্রহণ করছেন। এর অর্থ কি তবে জামায়াত- শিবির (ছাত্রসঙ্গ) ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে যে যে অপকর্ম করেছে। সবই সগিরা গুণাহ হিসেবে গণ্য করে করেছে? তবে কি মা-বোনদের পাকিস্তানী ধর্ষকদের ক্যাম্পে ক্যাম্পে তুলে দিয়েছে নিজেরা ধর্ষণ করেছে। এসবও সগীরা ভেবেই করেছে?
সুন্নত আদায় করা তাদের জন্য বাধ্য-বাধকতা নয়? সম্ভবত সে কারণেই মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে কিছু মানুষ, বিশেষ করে যুবা-তরুণ ফরজটুকু পড়েই বেরিয়ে যায় মুনাজাত দেয় না মহানবীর (স:) সুন্নত পড়ে? আমাদের জাতীয় প্রেসক্লাবে এখন জামায়াত-শিবিরের আনাগোনা বেশি, যে কারণে প্রেসক্লাবে নামাজ ঘরে এ দৃশ্য বেশি দেখা যায়।
জামায়াতের গঠনতন্ত্রের আরেকটি জায়গায় আছে “(ধারা ১১ (১) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি অর্থনৈতিক কর্মসূচীর সহিত একমত পোষণ করিলে যে-কোন অমুসলিম নাগরিক ইহার সহযোগী সদস্য হইতে পারিবেন।” অর্থাৎ তিনি ‘সহযোগী সদস্য’ (হাফ সদস্য) হতে পারবেন। পুরো সদস্য হতে পারবেন না। এক্ষেত্রে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো জামায়াতের রাজনীতির সাথে একমত পোষণ করলে যে কোন অমুসলিমও সদস্য হতে পারবেন। এর মানে একজন হিন্দু বা বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান বা পাহাড়ি তাকেও ইসলামে বিশ্বাস করতে হবে। এখানে গণতান্ত্রিকতা থাকে কি? জামায়াতের মুখে গণতন্ত্রের কথা কি মানায়? একজন অমুসলিম যদি মুসলমানের ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করে তা অবশ্যই সুখের কথা আরেকজন মুসলমানের কাছে, কিন্তু তা-ও হতে হবে স্বেচ্ছায় যদি কেউ ইসলাম গ্রহণ করে। কোনভাবেই কারো ওপর জোর-জবরদস্তি করা যাবে না। ইসলাম ধর্ম নিয়ে জোর-জবরদস্তি পছন্দ করে না। মানুষকে জবরদস্তি ধর্মান্তরিত করাও পছন্দ করে না।
এবার আসছি যে সংগঠনের নীতি-আদর্শ হলো ইসলাম, সে সংগঠনের মূলনীতিতে যদি সুন্নত-নামাজ ও অন্যান্য সুন্নত পালন না করলেও চলে বা সগিরা গুণাহ্র ব্যাপারে নমনীয়তা প্রদর্শনের কথা রয়েছে সে সংগঠন ইসলামিক সংগঠন কি-না এ প্রশ্ন সামনে চলে আসে না-কি? সুন্নত তো হলো বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব এবং সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (স:) যা যা বলেছেন বা পার্থিব জীবনে যা যা করতে হবে বলেছেন বা যা যা করতে হবে না দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, তা-ই, একজন সাধারণ মুসলমান হিসেবে আমি তা-ই বুঝি। এ ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই যে, আল্লাহ্ পাক-এর পবিত্র কোরআন শরীফ ও এর নির্দেশনাবলী এবং মহানবী (স:) এর হাদিুেসর মধ্যে কোন মতবিরোধ রয়েছে, অবশ্যই নেই বরং একটি আরেকটির পরিপূরক, আমাদের জন্য ঈড়সঢ়ষবঃব পড়ফব ড়ভ ষরভব একজন সাধারণ মুসলমান হিসেবে আমরা তাই বুঝি। যারা সত্যিকার ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন, অর্থাৎ যারা আল্লাহ্ পাক-এর কোরআন ও রাসূল (স:)-এর হাদিস সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন বা অসুল-ফিকাহ সম্পর্কে যাদের বুৎপত্তি রয়েছে, অর্থাৎ যাদের আমরা অথরিটি বলি এ সব ব্যাপারে মন্তব্য তারাই কেবল করতে পারবেন। অমুক ‘আল্লামা’ তমুক ‘ফকিহ’Ñওপরে এমন সব অলঙ্কার নিয়ে যারা সমাজে প্রতিপত্তি বিস্তার করেন অথচ ভেতরে অর্ধশিক্ষিত, এমন লোকের কথা বলছি না, এসব লোক তো নামের সাথে ওসব লাগায় নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য। আমি বলছি সত্যিকার ইসলামী প-িতদের সম্পর্কে। আজ সময় এসেছে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের প্রকাশ্যে আসার। ইসলাম সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেবার। কিংবা ‘নাস্তিক’ ‘মুরতাদ’ কারা, সে সম্পর্কে জনগণের সামনে ব্যাখ্যা তুলে ধরা। এক শ্রেণীর আল্লামা- দাবিদার রয়েছেন যারা কথায় কথায় যখন-তখন যাকে তাকে নাস্তিক, মুরতাদ বলছেন? তাতে করে সহজ-সরল ধর্মপ্রাণ মুসলমান বিভ্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু কে কারা নাস্তিক কে বা কারা মুরতাদ তা নির্ধারণ করবে কে? হ্যাঁ কোন ব্যক্তি যদি নিজেকে নাস্তিক বা মুরতাদ দাবি করে সে অবশ্যই নাস্তিক বা মুরতাদ সে ক্ষেত্রে সে ব্যক্তি তা ফলাও করে প্রচার করতে পারে না। এভাবে প্রচারও ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত করে, তাদের আহত করে। যারা আল্লাহ রাসূল (স:), ইসলাম, কোরআন, সুন্নাহ্ মসজিদ নিয়ে কটূক্তি করে তাদের কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না, তাদের বিচার হবে মানুষ তা-ই চায় ঠিক একইভাবে যাকে তাকে নাস্তিক মুরতাদ বলাও সমর্থনযোগ্য নয়। উভয় ক্ষেত্রেই ধর্মপ্রাণ মানুষকে আঘাত করে। তাদেরও বিচার হওয়া দরকার।
একটি ভুল প্রচারণা কত বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে সাম্প্রতিক বগুড়ার ঘটনা তার প্রমাণ। সাঈদীর চেহারা চাঁদে দেখা গেছে বা সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে (যা সর্বৈব মিথ্যা, বেদা’ত)Ñ এই গুজব সত্য কি মিথ্যা তা সহজ-সরল মুসলমানদের যাচাই করার সময় কোথায়? যার চেহারা চাঁদে দেখা যায় তাকে আদালত ফাঁসি দিচ্ছে তা-কি মেনে নেয়া যায়? আর তা-ই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দা-কুড়াল-খন্তি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে, থানা আক্রমণ করে, নিজেরা পুলিশ মারে, পুলিশ তাদের মারেÑ এমনটি কি ইসলাম ধর্ম সমর্থন করে?
হেফাজতে ইসলাম বা ইসলামের নাম ব্যবহারকারী সংগঠন ও ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বকে ‘নাস্তিক’, ‘মুরতাদ’ বলছেন। আমি জানি না, তারা জেনে বলছেন, নাকি না জেনে বলছেন? আমি বেশিরভাগ দিনই গণজাগরণ মঞ্চ এলাকায় গেছি, গভীর রাত পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইমরান-লাকীদের সেøাগান শুনেছি, বক্তব্য শুনেছি। তারা কি বলেছে? বলেছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- দিতে হবে। জামায়াত-শিবিরকে আবারো নিষিদ্ধ করতে হবে। (স্বাধীনতার অব্যবহিত পর বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ করেছিলেন) এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবেÑ এই তো তাদের কথা। তারা সেøাগানের মাধ্যমে বিস্মৃত আত্মপরিচয় অধিকারের কথা বলেছে।
“ জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু”
“তুমি কে আমি কেÑবাঙালী বাঙালী”
“পদ্মা-মেঘনা-যুমনা-তোমার আমার ঠিকানা”
এইতো? এখানে কোথায় ‘নাস্তিকতা?‘ বেগম খালেদা জিয়া লেখাপড়া জানেন না। তা-ই তিনি বলতে পারেনÑ “শাহবাগের নতুন প্রজন্ম ‘নষ্ট’ ‘নাস্তিক’ (?)। কিন্তু ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত একজন আলেম তা বলতে পারেন না। যতক্ষণ নাÑ ঐ ব্যক্তি নিজে নিজেকে ‘নাস্তিক’ বা ‘মুরতাদ’ ঘোষণা করছেন। সর্বোপরি মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনই কেবল শেষ বিচারের দিন হাশরের ময়দানে ঘোষণা করবেন কে ইমানদার কে গুণাহগার! কেননা আল্লাহ্-ই কেবল সার্বভৌম, আর কেউ নয়। আল্লাহর কোরান বা রাসূল (স:)-এর হাদিসে তার সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া আছে। এবং তা-ও সত্যিকার শিক্ষিত আলেমগণ বলতে পারবেনÑ যে কেউ নন।
কোন ব্লগার তার ব্লগে যদি আল্লাহ্, রাসূল (স.), কোরআন, হাদিস, মসজিদ সম্পর্কে কটূক্তি করে তার বিচার যেমন হবে, তেমনি যারা হাওয়ার ওপর কোন মুসলমানকে ‘নাস্তিক’ ‘মুরতাদ’ বলে তাদেরও বিচার হতে হবে। অন্যথায় মানুষের প্রতি অবিচার করা হবে। একথা এ লেখায় আগেও উল্লেখ করেছি, এখানো করছি। কেননা, এতে শান্তি বিনষ্ট হবার শঙ্কা থাকে।
গণজাগরণ মঞ্চের যে দাবি এবং সেøাগানগুলো আমি উল্লেখ করলাম তাতে কোন জায়গায় বলা আছে নাস্তিকতার কথা বা মুরতাদ হওয়ার কথা? আমি তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে দেখেছি, শুনেছিÑ একবারও এক মিনিটের জন্যও ওদের মুখ থেকে ইসলামবিরোধী, মুসলমানবিরোধী, কোরান-সুন্নাহ্বিরোধী কোন একটি শব্দ আমি শুনিনি। তাহলে কেন ওদের ‘নষ্ট’ ‘নাস্তিক’ ‘মুরতাদ’ বলা হচ্ছে? খালেদা বলছেন রাজনীতি ও তার পারিবারিক কারণে, একজন আলেম তা বলতে পারেন না।
চিলে কান নিয়েছে, কান পরীক্ষা না করে চিলের পেছনে দৌড়ানো ঠিক নয়। প্রজন্ম চত্বরের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বার বার বলেছেন, তিনি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং ধর্মপ্রাণ মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। তবু তাঁকে কেন নাস্তিক বলা হচ্ছে। তিনি হেফাজতে ইসলামের মুখপাত্র আল্লামা শাহ আহমেদ শফির সঙ্গে আলোচনাও করতে চেয়েছেন। দৈনিক জনকণ্ঠের শিরোনাম “ইমরানের সঙ্গে যখন হেফাজত কর্মীদের দেখা হলো”Ñ এই সংবাদে প্রশ্নটির উত্তর কিছুটা পাওয়া গেছে। কয়েকজন তরুণ হেফাজত কর্মী গত বুধবার তাদের লংমার্চের প্রস্তুতি সমাবেশ থেকে শাহবাগ দিয়ে ফেরার পথে ইমরান এইচ সরকারের সঙ্গে দেখা। ইমরান আগ্রহভরে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের যখন প্রশ্ন করেন ‘ব্লগ’ কি ‘নাস্তিক’ কাকে বলে? হিফাজতকর্মীরা জানেন না বলে কোন উত্তর দিতে পারেননি। তাহলে উত্তরটা কে দেবে? এ জন্যই বলছি, জামায়াতী প্রপাগা-া থেকে আলেম সমাজকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে।

ঢাকা -৫ এপ্রিল ২০১৩
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন