সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৩

এলাকা বদলে নাশকতার কৌশল জামায়াতের

গোলাম মুজতবা ধ্রুব
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

দেশজুড়ে সহিংসতা চালানোর পর জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা এবার নিজেদের এলাকা বদলে নাশকতা সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক র‌্যাব কর্মকর্তা। 

সিলেট জামায়াতের আমির এহসান মাহবুব জুবায়েরকে ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব বলছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা নিয়ে তিনি সিলেটে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনায় ছিলেন।

শনিবার রাত ৩টার দিকে উত্তরার হোটেল গার্ডেন রেসিডেন্স থেকে জামায়াত নেতা জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর রোববার দুপুরে উত্তরা র‌্যাব-১ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সিলেট শহীদ মিনারে হামলা, পুলিশকে মারধর, বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নাশকতায় নেতৃত্ব দেয়ায় সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় সদস্য জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল কিসমত হায়াৎ পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জামায়াত ইসলামীর নেতা কর্মীরা ‘নিজ নিজ এলাকা পরিবর্তন করে’ নাশকতা তৈরির চেষ্টা করছে।

“এলাকার স্থানীয় নেতারা নাশকতার নেপথ্যে থেকে বাইরে থেকে অন্য এলাকার কর্মীদের এনে নাশকতা সৃষ্টি করছে।”

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোরালো গোয়েন্দা নজরদারির কারণে জামায়াতের অনেক পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের দাবিতে গত নভেম্বর থেকেই পুলিশের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে আসছে জামায়াত শিবির কর্মীরা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায়ের পর তা ব্যপক রূপ পায়।

২২ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি ইসলামী দলের ব্যানারে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে জঙ্গি মিছিল নিয়ে তাণ্ডব চালানো হয়। সিলেট, ফেনীতে শহীদ মিনারে এবং রাজশষাহী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গণ জাগারণ মঞ্চে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। এসব ঘটনাতেও জামায়াতের ইন্ধন ছিল বলে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।

এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পর আবারো সারা দেশে তাণ্ডব চালায় জামায়াত-কর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে রেল স্টেশন, থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি সরকারি অবকাঠামো, আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি মন্দিরে হামলা, ভঅংচুর  ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সরকারি হিসাবে, এই সহিংসতা ও সংঘর্ষে সারা দেশে পুলিশসহ ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে লেফটেনেন্ট কর্নেল কিসমত হায়াৎ জানান, ২২ শহীদ মিনারে হামলাসহ বিস্ফোরণ ও নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে সিলেটে ১৬টি মামলা রয়েছে জামায়াত নেতা জুবায়েরের বিরুদ্ধে।

এর মধ্যে পাঁচটি মামলায় তিনি অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

“এহসান মাহবুব জুবায়ের ঢাকায় এসে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতাদের নির্দেশনা নিয়ে সিলেটে নাশকতা তৈরির পরিকল্পনা করছিলেন। এই তথ্যের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে”, বলেন কিসমত হায়াৎ।

জুবায়েরকে রাজধানীর উত্তরা থানায় সোপর্দ করা হবে বলে এই র‌্যাব কর্মকর্তা জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন