অগো ফাঁসি হইবো কবে, আল্লাহর ধারে (কাছে) মোর একটাই
ফরিয়াদ মরার আগে জানি অগো (যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার) ফাঁসি দেইখা যাইতে পারি।
হ্যালে মুই মইররাও শান্তি পামু। ওরা মোর সব কিছু শ্যাষ কইর্যা দেছে। আবেগ
আপ্লুত হয়ে কাঁপা স্বরে কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বীরাঙ্গনা
আমেনা বিবি। স্বাধীনতা যুদ্ধের জীবন্ত ইতিহাস বরিশালের গৌরনদী উপজেলার
দক্ষিণ পালরদী গ্রামের বীরঙ্গনা আমেনা বিবি (৮০)। দুরারোগ্য ব্যধিতে
আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় শয্যাশায়ী রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের
৪২ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও বিধবা আমেনা বিবির খোঁজ নেয়নি কেউ। এতদিন ভিক্ষা
করেই চলেছে আমেনার জীবন। তাতেও দুঃখ নেই তাঁর; শুধু মৃত্যুর পূর্বে তিনি
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেইখা মরতে চান। এটাই তাঁর জীবনের শেষ ইচ্ছে।
বিধবা আমেনা বিবি ও তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সনের স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল মুহূর্তে গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ পালরদী গ্রামের সোবহান হাওলাদারের পুত্র মুজাফ্ফর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। এ খবর পেয়ে স্থানীয় রাজাকারদের ইশারায় পাকসেনারা মুজাফ্ফরের বাড়িতে হানা দেয়। হানাদাররা মুজাফ্ফর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় তার মা আমেনা বেগম ও বাবা সোবহান হাওলাদারকে ধরে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী সরকারী গৌরনদী কলেজের পাকবাহিনীর স্থায়ী ক্যাম্পে। ওই ক্যাম্পে বসে সোবাহানের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। নির্মম নির্যাতনের পর সোবহানকে ছেড়ে দেয়া হলেও আমেনাকে ক্যাম্পের একটি কক্ষে আটক করে রাখা হয়। পরবর্তীতে ৭/৮ পাকসেনা আমেনার ওপর চালায় পাশবিক নির্যাতন। পর্যায়ক্রমে তিনদিন আটক করে আমেনা বেগমের ওপর চালানো হয় এ নির্যাতন। এক পর্যায়ে আমেনার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়। ছাড়া পাওয়ার পর আমেনা বেগম বাড়িতে ফিরে দেখতে পান তাদের বসত ঘরটি হানাদাররা পুড়িয়ে দিয়েছে। স্বামী নির্যাতনের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছেন। খোলা আকাশের নিচে আমেনা অসুস্থ স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় দ্বিতীয়বার কয়েকজন রাজাকার আবার আমেনার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এ সময় আমেনা আত্মহত্যার প্রস্তুতি নেয়। হঠাৎ করে জানতে পারেন তাঁর একমাত্র ছেলে মুজাফ্ফর বেঁচে আছে এবং সে গোপালগঞ্জের হেমায়েত বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে। তখন আমেনা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একমাত্র ছেলেকে একনজর দেখার জন্য জনশূন্য স্বামীর পরিত্যক্ত ভিটার ওপর অপেক্ষা করতে থাকেন। যুদ্ধ জয়ের বিজয় পতাকা নিয়ে তাঁর একমাত্র পুত্র মুজাফ্ফর বাড়িতে ফিরে দেখতে পান তার বাবা নেই, শুনতে পান মায়ের করুল কাহিনী। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪২ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও আমেনার ভাগ্যে জোটেনি সরকারীভাবে কোন সহানুভুতি। একমাত্র ছেলে মাছ বিক্রি করে কোন মতে তাঁর সংসার চালাচ্ছেন। অভাবের সংসারে আমেনা চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাই রোগাক্রান্ত শরীর নিয়ে আমেনা বিবি দীর্ঘদিন ভিক্ষা করে নামেমাত্র চিকিৎসা করিয়েছেন। বর্তমানে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে সম্পূর্ণ বিনা চিকিৎসায় শয্যাশায়ী রয়েছেন বৃদ্ধ আমেনা বিবি।
বিধবা আমেনা বিবি ও তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সনের স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল মুহূর্তে গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ পালরদী গ্রামের সোবহান হাওলাদারের পুত্র মুজাফ্ফর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। এ খবর পেয়ে স্থানীয় রাজাকারদের ইশারায় পাকসেনারা মুজাফ্ফরের বাড়িতে হানা দেয়। হানাদাররা মুজাফ্ফর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় তার মা আমেনা বেগম ও বাবা সোবহান হাওলাদারকে ধরে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী সরকারী গৌরনদী কলেজের পাকবাহিনীর স্থায়ী ক্যাম্পে। ওই ক্যাম্পে বসে সোবাহানের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। নির্মম নির্যাতনের পর সোবহানকে ছেড়ে দেয়া হলেও আমেনাকে ক্যাম্পের একটি কক্ষে আটক করে রাখা হয়। পরবর্তীতে ৭/৮ পাকসেনা আমেনার ওপর চালায় পাশবিক নির্যাতন। পর্যায়ক্রমে তিনদিন আটক করে আমেনা বেগমের ওপর চালানো হয় এ নির্যাতন। এক পর্যায়ে আমেনার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়। ছাড়া পাওয়ার পর আমেনা বেগম বাড়িতে ফিরে দেখতে পান তাদের বসত ঘরটি হানাদাররা পুড়িয়ে দিয়েছে। স্বামী নির্যাতনের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছেন। খোলা আকাশের নিচে আমেনা অসুস্থ স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় দ্বিতীয়বার কয়েকজন রাজাকার আবার আমেনার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এ সময় আমেনা আত্মহত্যার প্রস্তুতি নেয়। হঠাৎ করে জানতে পারেন তাঁর একমাত্র ছেলে মুজাফ্ফর বেঁচে আছে এবং সে গোপালগঞ্জের হেমায়েত বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে। তখন আমেনা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একমাত্র ছেলেকে একনজর দেখার জন্য জনশূন্য স্বামীর পরিত্যক্ত ভিটার ওপর অপেক্ষা করতে থাকেন। যুদ্ধ জয়ের বিজয় পতাকা নিয়ে তাঁর একমাত্র পুত্র মুজাফ্ফর বাড়িতে ফিরে দেখতে পান তার বাবা নেই, শুনতে পান মায়ের করুল কাহিনী। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪২ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও আমেনার ভাগ্যে জোটেনি সরকারীভাবে কোন সহানুভুতি। একমাত্র ছেলে মাছ বিক্রি করে কোন মতে তাঁর সংসার চালাচ্ছেন। অভাবের সংসারে আমেনা চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাই রোগাক্রান্ত শরীর নিয়ে আমেনা বিবি দীর্ঘদিন ভিক্ষা করে নামেমাত্র চিকিৎসা করিয়েছেন। বর্তমানে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে সম্পূর্ণ বিনা চিকিৎসায় শয্যাশায়ী রয়েছেন বৃদ্ধ আমেনা বিবি।
-খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল। জনকণ্ঠ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন