বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
গাজীপুর: মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলাটির তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক আহসান হাবিব এ নির্দেশ দেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১২টায় বাদীর জবানবন্দি শুনে আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
গাজীপুর: মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলাটির তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক আহসান হাবিব এ নির্দেশ দেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১২টায় বাদীর জবানবন্দি শুনে আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
গাজীপুরের কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম সংশ্লিষ্ট আদালতের বরাত দিয়ে বাংলানিউজকে এ আদেশের তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলাটি দায়ের করা হয় সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায়। মামলায় কাশিমপুর কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্ত হাজতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বর্তমান সংসদ সদস্য সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার সেবায় নিয়োজিত এক কারাবন্দি তরুণের ওপর ওই যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।
কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত ওই তরুণকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ভিকটিমের পিতা মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় জেল থেকে মুক্ত করার প্রলোভন দিয়ে ওই যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক আহসান হাবিবের আদালতে ওই মামলা দায়ের করেন ঘটনার শিকার তরুণের পিতা আঃ সালাম। বাদীর পিতার নাম হামিদ মিয়া। বাড়ি শেরপুর জেলার সদর উপজেলার হাতিআলগা রসুলপুর গ্রামে।
ফৌজদারি দণ্ডবিধি আইনের ৩৭৭/৩২৩/৫০৬(২) ধারায় দায়েকৃত মামলাটির বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে আদালত আদেশের অপেক্ষায় রেখে দেন। মামলার স্বাক্ষী বাদী, তার ছেলে ঘটনার শিকার তরুণ ও কাশিমপুর কারাগার-১ এর জেল সুপার জামিল আহমেদ চৌধুরী।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ‘‘বাদীর ছেলে শেরপুর থানার একটি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং কাশিমপুর কারাগার পার্ট-১ এ বন্দি ছিলেন। আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরী একই কারাগারে ২৩ অক্টোবর ২০১২ সাল থেকে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে রয়েছেন। ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর কারা কর্তৃপক্ষ ভিকটিমকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সেবক হিসেবে নিয়োগ দান করেন। আসামির সেবক হওয়ার সুবাদে ভিকিটম নিয়মিত আসামির কক্ষে যাতায়াত করতেন।
‘‘আসামি ভিকটিমের কাছে থেকে মিথ্যা মামলায় সাজা হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত জেনে জেল থেকে মুক্ত করার আশ্বাস দেন। ভিকটিম জেলমুক্তির আশায় আসামির সেবা যত্নে বেশি করে মনোনিবেশ করেন। গত ২০ নভেম্বর ২০১২ রাত ৯টার সময় ভিকটিম আসামির কক্ষে সেবাযত্ন করাকালে আসামি ভিকটিমকে তার শরীর ম্যাসেজ করে দিতে বলেন। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে ও জেলমুক্ত হওয়ার আশায় আসামির শরীর টিপে দিতে থাকলে এক পর্যায়ে যৌন নিপীড়ন করেন।’’
‘‘এতে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়লে আসামি ভয়-ভীতি দেখিয়ে ওই সংবাদ কাউকে জানালে খুন করা হবে বলে হুমকি দেন। ভিকটিম আসামির ভয়ে ও দ্রুত জেলমুক্তির আশায় ঘটনাটি কাউকে জানাননি।’’
মামলায় বলা হয়, ‘‘২০ নভেম্বর ২০১২ থেকে ৫ জানুয়ারি ২০১৩ রাত ১১টা পর্যন্ত ওই যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে।’’
‘‘এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ বাদী তার ছেলের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গেলে ভিকটিম তার বাবাকে ঘটনা খুলে বলেন। বাদীর পরামর্শে ভিকটিম ১৩ ফেব্রুয়ারি কারা মহাপরিদর্শককে লিখিত ভাবে ঘটনা জানালেও কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর ভিকটিমের পিতা গাজীপুর সদরের জয়দেবপুর থানায় একটি এজাহার দেন। কিন্তু পুলিশ এজাহার গ্রহণ করেনি।’’
এ অবস্থায় সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় বাদী গাজীপুর আদালতে হাজির হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে ভিকটিমের পায়ুপথ ও মুখ ব্যবহার করে যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গাজীপুর বারের সাবেক সভাপতি ও গাজীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ ওয়াজ উদ্দিন মিয়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন