মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৩

লাশ ফেলার রাজনীতিতে তৎপর জামায়াত শিবির ॥ ছক কষছে নাশকতার

০ এক শ’ আলেম হত্যার গোপন চক্রান্তের কথা ফাঁস করলেন তরীকত নেতা মাইজভাণ্ডারী
০ লংমার্চ জামায়াতের অর্থে
০ হেফাজতের নেপথ্যে শিবিরের ৫ নেতা
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার বানচালে পুরোপুরি দেশ অচল করে দিতে আগামী ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ডাকা ঢাকা লংমার্চ ঘিরে জামায়াত-শিবির প্রস্তুত করেছে নাশকতার ছক। দেশজুড়ে সাধারণ মুসল্লিদের ক্ষেপিয়ে তুলে সরকারকে ক্ষমতা থেকে ফেলে দিতে হেফাজতের কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে ৫০ থেকে ১০০ আলেম-ওলামা ও কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষককে হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছে জামায়াত-শিবির। ২০০১ সালের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার মতো লাশ ফেলে সরকারের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলনে নামবে জামায়াত-বিএনপি জোট। হেফাজতে ইসলামে লংমার্চকে অরাজনৈতিক আন্দোলন বললেও একে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য মানুষ হত্যার ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়েছে জামায়াত-শিবির। কেবল তাই নয়, এই আন্দোলন ইতোমধ্যেই জামায়াত-শিবিরসহ তাদের মদদপুষ্ট উগ্রবাদীদের হাতে চলে গেছে। যে কোন মূল্যে এ কর্মসূচীর নামে নাশকতা সৃষ্টিতে ইতোমধ্যেই সক্রিয় করা হয়েছে জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডারদের।
আগামী ৬ এপ্রিলের আলোচিত এ কর্মসূচী নিয়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত মওদুদীবাদী জামায়াত-শিবিরের ভয়াবহ এ নাশকতার ছক ফাঁস করে দিয়েছে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। ঠিক একই ধরনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে জনকণ্ঠের অনুসন্ধানেও। ‘আমাদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক নেই’-একথা হেফাজতে ইসলামের নেতারা প্রচার করলেও জানা গেছে জামায়াতের অর্থে গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী হেফাজতে ইসলামের আসল চেহারা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলরত ব্লগারদের ‘নাস্তিক ও মুরতাদ’ অভিহিত করে আন্দোলন করছেন তারা। কিন্তু, জানা গেছে, সংগঠনের কয়েক ব্যক্তি ছাড়া সকলেই বিএনপির মিত্র জামায়াতসহ উগ্রপন্থী কয়েকটি দলের নেতা। চট্টগ্রামে ‘হেফাজতে ইসলাম’ মূলত জামায়াত-শিবিরের একটি অংশ। নেপথ্যে কাজ করছেন জামায়াত-শিবিরের পাঁচ নেতা। জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীর দায়ে অভিযুক্ত এক বিএনপি নেতার পরিবারের অর্থ ও পরিকল্পনায় চলছে এ কার্যক্রম। ব্যাপক লোকসমাগমের মাধ্যমে রাজধানীকে স্থবির করে দেয়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, প্রতিটি জেলা শহরে দিনব্যাপী সমাবেশের আয়োজনসহ বিভিন্ন চক্রান্ত বাস্তবায়নে রাত-দিন হেফাজতের বিতর্কিত কয়েক নেতার সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করছেন জামায়াত নেতারা। এই নেতারাই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপির সমর্থন আদায় করেছেন। বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম এলাকার নেতাকর্মীদের হেফাজত নেতাদের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে কাজ করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। পুরো লংমার্চ হতে যাচ্ছে জামায়াতের অর্থায়নে। হেফাজতে ইসলামের সদস্য সচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবু নগরী এতে মধ্যস্থতা করছেন। ছাত্র শিবিরকর্মীদের অনেকেই কারাগারে এবং একটি বড় অংশ আত্মগোপনে থাকায় রাজপথের আন্দোলন-সহিংসতায় এখন আর তেমন যুত করতে পারছে না জামায়াত। তাই ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে কওমি মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈরাজ্য-সহিংসতায় ব্যবহার করতে চাইছে দলটি। এ বিষয়ে অভিভাবকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে উদ্বেগ। এদিকে হেফাজতের একাধিক সূত্র বলছে, ওই দিন সারাদেশ থেকে লাঠিসোটা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে হেফাজতের ব্যানারে রওনা হবে কয়েক লাখ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মী ও হেফাজত সমর্থিত মাদ্রাসা ছাত্ররা। এর আগে গত কয়েকদিন ধরেই হঠাৎ চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলাম আলোচনায় আসে গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী আন্দোলন করে। দাবি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠলেও বার বার সংগঠনটির নেতারা দাবি করছেন, তাদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক নেই। তবে ধীরে ধীরে বের হচ্ছে সংগঠনিটির নেতা ও এর কর্মকা-ের চিত্র। জানা গেছে, সংগঠনের কিছু ব্যক্তি ছাড়া সকলেই বিএনপির মিত্র জামায়াতসহ উগ্রপন্থী কয়েকটি দলের নেতা। চট্টগ্রামে ‘হেফাজতে ইসলাম’ মূলত জামায়াত-শিবিরের একটি অংশ মাত্র। যার নেপথ্যে কাজ করছেন জামায়াত-শিবিরের পাঁচ নেতা। এই পাঁচ নেতার মধ্যে কয়েকজনের বিরুেেদ্ধ জঙ্গী কানেকশনেরও অভিযোগ রয়েছে। হঠাৎ করেই হেফাজতে ইসলামের উত্থান ও অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর বেরিয়ে এসেছে নানা তথ্য। হেফাজতে ইসলামের আড়ালে সব কিছুই হচ্ছে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা মোতাবেক। পরিচালিত হচ্ছে জামায়াত-শিবিরের পাঁচ নেতার ইশারা-ইঙ্গিতে। এদের সকলে সংগঠনটিতে সদস্য না হলেও এঁরাই যোগাযোগ রক্ষা করছেন জামায়াতের সঙ্গে। শাহ আহমদ শফী হেফাজতে ইসলামের আমির হলেও মূলত ওই পাঁচ ব্যক্তির কমান্ডেই চলছেন তিনি। একজন হলেন নেজামী ইসলামী নামে আরেকটি ধর্মভিত্তিক দলের চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এই সংগঠনের কর্মকা- ছিল গণহত্যার পক্ষে। আব্দুর রহমান যুদ্ধাপরাধের দায়ে কারাগারে আটক সাকা চৌধুরীর নিকটাত্মীয়। আছেন চট্টগ্রাম হাটহাজারীর সাবেক ছাত্র শিবিরের নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী। কয়েক দিন আগেও তিনি জামায়াতের ওই থানায় সক্রিয় ছিলেন। আছেন সাকা মুক্তি পরিষদের অন্যতম নেতা এমএ হাশেম খান, রাঙ্গামাটি শিবিরের সাবেক নেতা ও বর্তমানে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান নিজামী এবং জঙ্গী সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক নেজামী ইসলামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুফতি এজেহারের ছেলে হারুন এজাহার। পিতা-পুত্র দু’জনকেই জঙ্গী সংগঠন হরকত-উল-জিহাদের সঙ্গে সম্পৃক্তার অভিযোগে আটক করে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এদের সংগঠনিটির সংবাদ সম্মেলনেও দেখা যায়। আর ঢাকায় হেফাজতের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন বা অন্য যে কোন কর্মসূচী হলে সেখানে হেফাজতের নেতা হিসেবে যাঁরা কথা বলছেন তাঁরা প্রত্যেকেই বিএনপি-জামায়াত জোটের উগ্রবাদী ইসলামী দল ও সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। এমনকি প্রতিটি কর্মসূচীও হচ্ছে একই জোটের প্রয়াত ফজলুল হক আমিনীর অফিস কক্ষে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনরত গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করে ইসমাল ধর্ম রক্ষার নামে এবং ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে হেফাজতে ইসলাম আন্দোলন করলেও মূলত তাদের ব্যানারে উচ্চারিত হচ্ছে সেই জামায়াত-শিবিরের দাবিগুলোই। ইসলাম অবমাননার কথা বললেও মূলত জামায়াতে ইসলাম যেসব দাবি নিয়ে দেশে সহিংসতা চালাচ্ছে সেসব দাবিই ফুটে উঠছে হেফাজতে ইসলাম নেতাতের মুখে। বক্তব্যে বিভিন্ন সময় জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবি তোলা হচ্ছে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা যুদ্ধাপরাদের বিচারের বিরুদ্ধে এবং নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে সম্প্রতি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ফেসবুক পেজ ‘বাঁশের কেল্লা। অথচ এই সংগঠনের কর্মসূচীতে বাঁশের কেল্লা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরেই গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে ৬ তারিখে হেফাজতের ব্যানারে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরসহ জঙ্গীদের নাশকতার চক্রান্তের কথা। কর্মসূচী নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু সংগঠনটির প্রধান বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁর নামে নানা তথ্য ছড়িয়ে তাঁকে বিভ্রান্ত করে জামায়াতের পরিকল্পনার নাশকতার ছক কষছেন উগ্রবাদীরা। আগামী ৬ এপ্রিল দেশে কী হচ্ছে? এমন এক উদ্বেগজনক প্রশ্নের মুখেই সোমবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতের কর্মসূচীর আড়ালে জামায়াত-শিবির চক্রের হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা সম্পর্কে দেশের মানুষ, হেফাজত নেতা ও সরকারকে সতর্ক করেছে তরীকত ফেডারেশন। রাজধানীর হোটেল ইম্পেরিয়াল ইন্টারন্যাশনালে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের মহাসচিব লায়ন এমএ আউয়াল। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহ মিরান আলকাদরী, যুগ্ম মহাসচিব ডা. সৈয়দ আবু দাউদ মসনবী হায়দার, সাংগঠনিক সম্পাদক আজহাজ মুহাম্মদ আলী ফারুকী, দফতর সম্পাদক মোঃ সেলিম মিয়াজী, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হাছান, ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক মোঃ মজিবুর রহমান মানিক, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নেছার উদ্দিন আহম্মেদ জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী বলেন, আমরা আমাদের নেতা ও হেফাজদের ভেতরে থাকা জামায়াতবিরোধী নেতাদের মাধ্যমে শতভাগ নিশ্চিত হয়েছি, হেফাজতে ইসলামীর লংমার্চে জামায়াত-শিবির ঢুকে ৫০ থেকে ১০০ জন আলেম-ওলামাসহ সাধারণ মানুষের লাশ ফেলবে। সহিংসতা চালিয়ে তারা রাজনৈতিকভাবে ফায়দা লুটবে। এক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন এবং হেফাজত নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে। নইলে এর দায় পুলিশ এবং হেফাজত উভয়ের। তিনি জানান, ওই সংগঠনে যারা কওমি মাদ্রাসার পক্ষের নেতা তারা আমাকে অব্যাহতভাবে জানাচ্ছেন, জামায়াতের নাশকতার কথা। এই নেতারা এখন জীবনের কথা ভেবে সেখান থেকে বের হতে পারছেন না। আমরা আমাদের রাজনৈতিক সোর্স থেকেও একই তথ্য পেয়েছি। অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ না করলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র দেশকে দেশের স্বাধীনতাকে বিলীন করে দেবে। দেশের তরীকতপন্থীদের এ নেতা হেফাজতে ইসলামের নেতাদের অবিলম্বে আন্দোলন থেকে সরে এসে বিকল্প চিন্তার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, পরিস্থিতি বলছে হেফাজতের আন্দোলন অরাজনৈতিক হলেও এর পুরো ফল ভোগ করবে ১৮ দলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট। ফলে তরীকত ফেডারেশন মনে করে, আগামী ৬ এপ্রিলের লংমার্চ কেন্দ্র করে কোন ধরনের সহিংসতা কিংবা দেশের আলেম-ওলামা ও মাদ্র্রাসার ছাত্রদের কোন ক্ষতি হলে এর দায়-দায়িত্ব হেফাজতে ইসলামকেই বহন করতে হবে। আর সরকারকে বলতে চাই এই মুহূর্তে যথাযথ পদক্ষেপ নিন, অন্যথায় যে কোন ধরনের প্রাণহানি নাশকতা ঘটলে সরকারও দায় এড়াতে পারবে না। জামায়াতের রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল না করলে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব। বিএনপি-জামায়াতকে বাঁচাতে চাইলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে নামব। আওয়ামী লীগ জামায়াত নিষিদ্ধ না করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিতে বাধ্য হব। এ বিষয়ে তিল পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের নজিবুল বশর মাইজভা-ারী বলেন, হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতার সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। তাদের অনেকেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারাই আমাকে জানিয়েছে, এ লংমার্চে জামায়াত সুযোগের অপেক্ষায় আছে। জামায়াত সুযোগ নেবে, এমনটি তারাও চান না। জামায়াত ইসলামের শত্রু। এটিকে আমরা ইসলামী দল মনে করি না। এটা যুদ্ধাপরাধী জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কতিপয় ব্লগার যে অপরাধ করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি আমরাও চাই। তবে মনে রাখতে হবে, এরা ইসলাম ও মহানবীকে যে অবমাননা করেছে তার চেয়ে হাজার গুণ অবমাননা জামায়াত প্রতিদিন করছে। এরা ইসলামকে বিকৃত করেছে। জামায়াত ও তাদের নেতাদের লেখা সকল বই প্রকাশনা অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ এখানে ইসলামকে বিকৃত করা হয়েছে। মহানবীকে অপমান করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে লায়ন এমএ আউয়াল সম্মেলনে তরীকত ফেডারেশনের পক্ষ থেকে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা, হযরত মোহাম্মদ (সা) এর বিরুদ্ধে কটূক্তি ও ইসলাম এবং অন্য ধর্মের অবমাননা রোধে সংসদে আইন পাসসহ ১১ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। এ দাবি না মানলে আগামী ৪ মে রাজধানীতে লাখ লাখ লোকের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এমএ আউয়াল বলেন, আমরা হেফাজতে ইসলামের বিরোধী নই। তাদের সহযোগিতা করতে চাই। তাদের কাছে অনুরোধ ৬ এপ্রিলের কর্মসূচী নিয়ে চিন্তা করুন। লংমার্চে মানুষ মারা গেলে এর দায় হেফাজতে ইসলাম ও সরকারকে নিতে হবে। লিখিত বক্তব্যে এমএ আওয়াল আরও বলেন, হেফাজতের আন্দোলন ধর্মীয় মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন হলেও মূলত বিএনপি-জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে ও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এর পুরো প্রক্রিয়া সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ২০০১ সালে হাইকোর্টের ফতোয়া নিষিদ্ধ রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ৬ মাদরাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। পরপর নির্বাচনে এটিকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসে। এবারেও হেফাজতের আন্দোলনকে পুঁজি করে পূর্বের মতো প্রাণনাশের ঘটনা ঘটিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত করতে চায় তারা। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির এখনও এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করে না। তাছাড়াও ইসলামের লেবেলে তারা মহানবী (সা) ও আওলিয়ায়েকেরাম বিদ্বেষী ভ্রান্ত মওদুদীবাদের দর্শনে এদেশে সন্ত্রাসী কায়দায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়। এদের কারণে শান্তি ও মানবতার ধর্ম পবিত্র ইসলাম আজ প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে সরকারকে জোর দিয়ে বলতে চাই-অনতিবিলম্বে জামায়াত-শিবির রাজনীতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ইস্যু কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে সরকার ও প্রধান বিরোধী দল কোন এজেন্ডা তৈরিও সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না। এ ব্যাপারে আমরা মনে করি দেশের সুন্নি, তরীকতপন্থী ও কওমি আদর্শে বিশ্বাসী সকল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে জঙ্গীবাদী যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবিরের অপরাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সকল মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা সময়ের অন্যতম দাবি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন