শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৩

জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি শোলাকিয়া ইমামের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
মতিঝিল থেকে: জামায়াত-শিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে তাদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ও খতিব ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

শনিবার বিকেলে মতিঝিল শাপলা চত্বরে ‘ওলামা মাশায়েখ তৌহিদী জনতা সংহতি পরিষদ’ আয়োজিত মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মাসউদ বলেন, “জামায়াত-শিবিরের মূল গুরু (মওদুদী) আলেম ছিল না। ছিল একজন সাংবাদিক। সে গুছিয়ে গুছিয়ে কথা লেখে পীর আওলিয়া আল্লাহ রাসুলের উপর জুলুম করেছে।”
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, “আল্লাহ-রাসুলকে অবমাননা করেছে মওদুদী। জামায়াত তার আদর্শ লালন করছে। জামায়াত-শিবির কোন রাজনৈতিক দল নয়, তারা সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী সংগঠন। আল্লাহ ও  রাসুলকে অবমাননা করে তারাই আজ বড় নাস্তিক ও মুরতাদে পরিণত হয়েছে। তাই তাদেরকেও প্রতিহত করতে হবে।”

জামায়াত-শিবিরকে উদ্দেশ্যে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, “আমরা আদবের সঙ্গে বলতে চাই, তওবা করে সঠিক পথে আসুন। আল্লাহ ক্ষমা করে দিলেও দিতে পারে। আর অন্যায়ের সঙ্গে থাকবেন না।”

তিনি বলেন, “যারা ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট করেছেন তারা শয়তাকে সাহায্য করেছেন। তারা বিধর্মীদের সহায়তা করছেন। ইসলামী ব্যাংক ইসলামের কথা বলে সুদ খায়, ঘুষ দেয়। ইসলামী ব্যাংকে যারা টাকা রাখেন তারা জাহান্নামে পুড়ে মরবেন। আমি তাদের বলবো ইসলামী ব্যাংক থেকে একাউন্ট তুলে নেন।”

ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ অভিযোগ করেন, এই মহাসমাবেশ না করার জন্য নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছিল। প্রতিহত করাও হুস্কার দিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। মহাসমাবেশে পথে আসার সময় বিভিন্ন জায়গায় হামলার শিকার হয়েছে অনকে কর্মী। হাসপাতালে তাদের অপারেশন চলছে।

“নানা রকম হুমকি ধামকি উপেক্ষা করে এই সমাবেশ আসা প্রমাণ করে, জামায়াতের দিন শেষের দিকে” বলেন ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, “ইসলাম কোন ধর্মের অবমাননা সহ্য করে না। সরকার ব্লগের অবমাননার বিচার করতে কমিটি করেছে। আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে যাদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে তারা এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান রাখেন না। তারা কি করে বুঝবেন যে ব্লগে অবমাননা করা হয়েছে কি না।”

তিনি বলেন, “সুষ্ঠুভাবে বিচার করতে হলে আলীয়া মাদ্রাসা, কওমী মাদ্রাসা ও পীর মাশায়েখদের প্রতিনিধিদের সংযুক্ত করতে হবে। তবেই প্রকৃত বিচার সম্ভব হবে।”
মওলানা মাসউদ বলেন, “সরকারের অন্যতম দু’টি ওয়াদা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।  যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কোন রকম টালবাহনা বরদাস্ত করা হবে না।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পুলিশি হয়রানির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “মওদুদীরা দাড়ি রাখে না, পাগড়ি পরে না। তারা পাঞ্জাবীর সঙ্গে প্যান্ট পরে। দাঁড়ি টুপি দেখলেই ধরবেন না, ধরলে আল্লাহর গজবে পড়বে।”

জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, যুদ্ধপরাধীদের বিচার দ্রুত করা,আল্ল‍াহর রাসুলের অবমাননা কারীদের শাস্তি,কওমী মাদ্রামার স্বীকৃতি, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ভারতে দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভিসা চালু, কওমী মাদ্রাসা আলেমদের ঢালাওভাবে জামায়াতী চিহ্নিত ও ধরপাকড় বন্ধসহ ১০ দফা দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে শেষে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লূর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজানা পরিচালনা করেন শোলাকিয়া ইমাম ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

এর আগে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রতিনিধিরা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন