রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৩

হেফাজত-বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ভাগাভাগি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: ভালোই জমেছে সরকার বিরোধী পাতানো আন্দোলন। অরাজনৈতিক আন্দোলনের আওয়াজ দিলেও কার্যত বিএনপি-জামায়াতকেই যেন হেফাজতের গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে নব আবির্ভূত হেফাজতে ইসলাম।

তাই সাম্প্রতিক রাজনীতিতে গাঁটছড়া বাঁধা বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত অনেকটা ভাগাভাগি করেই আন্দোলনের ময়দান দখলে রাখতে চাইছে। এই তিন দলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড আর নেতাদের কথাবার্তা বিশ্লেষণেও বিষয়টি বেশ স্পষ্ট হয়ে ফুটছে।

তাই ৬ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত হেফাজত নেতারা টানা তিন দিন হরতাল দেওয়ার আভাস দিলেও কার্যত তা করেন নি।

কেবল ৮ এপ্রিল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছেন তারা। আর তাদের ওই হরতাল ঘোষণার মাত্র চার কি পাঁচ ঘণ্টার মাথায় বৈঠকে বসে ৯ ও ১০ এপ্রিল হরতাল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮ দলীয় জোট।

অর্থাৎ হরতাল তিন দিনই হচ্ছে। তবে কৌশলে হেফাজতের সঙ্গে দিন ভাগাভাগি করে নিয়েছে ১৮ দল তথা জামায়াত-বিএনপি।

তাই বলা চলে, হেফাজতের এক দিন, আর জামায়াত-বিএনপির একদিন করে। সব মিলিয়ে টানা তিন দিন হরতাল হওয়ার সম্ভাবনা জেগেছে চলতি সপ্তাহে। যেহেতু গাঁটছড়া বাধা হয়ে গেছে- তাই আগেও নয় বা পরেও নয়, হেফাজতের হরতালের সঙ্গেই হরতাল জুড়ে দিতে হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতকে।

দলীয় সূত্রমতে, রোববার সন্ধ্যা নাগাদ হেফাজত ঘোষিত হরতালের সঙ্গে আরে দ‍ু’দিন হরতাল জুড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিতে পারে ১৮ দলীয় জোট। এতে প্রকৃতপক্ষে সরকার বিরোধী পাতানো আন্দোলনের ষোলকলাই পূর্ণ হবে।

যদিও হেফাজতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধার কথা স্বীকার করছে না বিএনপি-জামায়াত। এমনকি শনিবারের সমাবেশে হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী তাদের মধ্যে জামায়াত-শিবির বা অন্য কোন দল থাকার কথা চ্যালেঞ্জের সুরেই অস্বীকার করেছেন।

কসম কেটে তিনি বলেছেন, “আল্লাহর কসম আমাদের মধ্যে কোন জামায়াত-শিবির নেই। কোন দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বা সংঘর্ষ নেই।”

কিন্তু তাদের সাম্প্রতিক রাজিনৈতিক পদক্ষেপ বেশ বুঝিয়ে দিচ্ছে হেফাজত-জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক বস্তুত সমসূত্রেই গাথা হয়ে গেছে।

অরাজনৈতিক আন্দোলনের দাবি নিয়ে গড়া হেফাজতের মঞ্চে গিয়ে শনিবার সংহতি প্রকাশ করে এসেছে বিএনপি। দলটির দুই প্রভাবশালী নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ভাইস-চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা গিয়েছিলেন মতিঝিলের মঞ্চে। জানিয়েছেন একাত্মতা। হেফাজত কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে ড. মোশাররফ বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিএনপি আছে।

আর মহাসমাবেশ শেষ হওয়ার পর শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে হামলার চেষ্টা চালানো হেফাজত কর্মীদের মধ্য থেকে পাঁচ শিবির কর্মীকে পাকড়াও করেছে পুলিশ।

অতএব, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো যতোই রাখঢাক করুন না কেন, তাদের পারস্পরিক সুস্পর্কের উদারহণ স্পষ্টই হয়ে উঠেছে।

গোয়েন্দা সূত্রমতে, লংমার্চের আগে আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঢাকা মহানগর হেফাজতের আহবায়ক নূর হোসাইন কাসেমীর সাক্ষাৎ তাদের সুসম্পর্কেরই বহি:প্রকাশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন