প্রথম আলো | বগুড়া প্রতিনিধি | তারিখ: ১৬-০৩-২০১৩
৩ মার্চ। সকাল সাতটা ২৫ মিনিট। বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলার শহীদ আবদুল
জোব্বার সড়ক। বগুড়ার দৈনিক করতোয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান করতোয়া কুরিয়ার
সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়টি এ সড়কেই অবস্থিত। সাতটা ২৬ মিনিটে এ কার্যালয়ে
হামলা হয়। সাতটা ২৭ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে
ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা।
সংখ্যায় তারা ১৭-২০ জন। সবার হাতে হাতুড়ি, রড ও লাঠি। বয়স ১৮-৩০ বছরের মধ্যে। কারও পরনে শার্ট-প্যান্ট, কেউ গেঞ্জি-প্যান্ট পরা। কার্যালয়ে ঢুকেই ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করে হামলাকারীরা। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ভাঙচুর ও লুটপাটের একপর্যায়ে কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
বগুড়ায় জামায়াত-শিবিরের সাম্প্রতিক সহিংসতা ও তাণ্ডবের একটি চিত্র এটি। হামলাকারীরা যখন প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের ভেতরে এমন সহিংসতা চালাচ্ছিল, তখন গোপন ক্যামেরায় (সিসিটিভি) তাদের সে তাণ্ডবের ভিডিওচিত্র ধারণ হচ্ছিল। কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর একপর্যায়ে গোপন ক্যামেরাটিও পুড়ে যায়। নষ্ট হয়ে যায় ধারণকৃত চিত্রটিও। কিন্তু তাণ্ডবের চিত্রটি রয়ে যায় আরেকটি সার্ভারে। গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়া ওই ভিডিওচিত্রের একটি ডিস্ক এখন পুলিশের হাতে। ভিডিওচিত্র দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে বগুড়ার পুলিশ প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার মোজামেঞ্চল হক বলেন, ‘করতোয়া কুরিয়ারে তাণ্ডব চালানোর সময় প্রতিষ্ঠানটির সিসিটিভিতে যে চিত্র ধরা পড়েছে, সেটা দেখে যে কেউ আঁতকে উঠবেন। হামলাকারীরা প্রায় সবাই যুবক। দু-একজন বাদে সবাই শার্ট-প্যান্ট ও গেঞ্জি পরা। এদের আক্রমণের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, এরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেউ।’
করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোজামেঞ্চল হক বলেন, সেদিনের তাণ্ডবে প্রতিষ্ঠানটির কয়েক লাখ টাকা লুটপাট হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ সহিদ আলম বলেন, গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ওই ভিডিওচিত্র দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাদের শনাক্ত করা গেলে বগুড়ায় সেদিনের তাণ্ডবের হোতাদেরও শনাক্ত করা যাবে। কারণ হামলাকারীদের ওই দলটিই ওই দিন করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিস লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি পাশের এসএ পরিবহন ও এসএ কুরিয়ার সার্ভিস, এটিএন বাংলা কার্যালয় ও এটিএন ইলেকট্রনিক্সসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন